পেট্রোবাংলায় হামলা–ভাঙচুর, পাঁচজন বাধ্যতামূলক ছুটিতে
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনে (পেট্রোবাংলা) হামলা ও ভাঙচুরে জড়িত থাকার অভিযোগে সংস্থাটির চারজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাঁদের অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলা ভবনে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পেট্রোবাংলা ও তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই হামলা চালান। হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
হামলার ঘটনার পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টার নির্দেশনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।
পেট্রোবাংলার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো পাঁচজন হলেন উপমহাব্যবস্থাপক (অনুসন্ধান ও সমীক্ষা প্রকল্প) তারিকুল ইসলাম, উপমহাব্যবস্থাপক (সেবা) আব্দুল জলিল, ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা কৌশল) ফজলুল হক, ব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও প্রশাসন বিভাগের উচ্চমান সহকারী মো. নজরুল ইসলাম। হামলায় জড়িত তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির (টিজিটিডিপিএলসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ গতকাল বাতিল করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এরপর ওই রাতেই তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজকে নিয়োগ দেয় পেট্রোবাংলা। আজ দায়িত্ব গ্রহণ করতে গেলে সেখানকার কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাঁকে যোগদানে বাধা দেয়। এরপর পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে হামলা চালায় তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ। পেট্রোবাংলার সামনের কাচের গেট এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাজিরার জন্য নির্মিত ই-গেট ভাঙচুর করে। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে পেট্রোবাংলার কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী আহত হন। তাঁদের মধ্যে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কিছু বহিরাগত লোকজনও ছিল।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ নিয়ে আজ পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, পেট্রোবাংলাসহ গ্যাস খাতের ১৩টি প্রতিষ্ঠান মিলে জ্যেষ্ঠতার একটা তালিকা আছে। সেই তালিকায় ৬৪ জনের মধ্যে তিতাসের কোনো কর্মকর্তা নেই। অথচ তিতাসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের দাবি করেছেন। এটা করা হলে অন্যদের সঙ্গে বৈষম্য হবে। তিনি আরও বলেন, তিতাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের অনেক অভিযোগ আছে। সেখানকার কোনো কর্মকর্তা দায়িত্ব পেলে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তিতাসকে দুর্নীতিমুক্ত করার পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা। তাই পেট্রোবাংলার জ্যেষ্ঠতার তালিকা থেকে সততা ও দক্ষতায় সেরা কর্মকর্তাকে বাছাই করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।