ফেনীতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার
ফেনী শহরের কালীপালে গাজীগঞ্জ মহাপ্রভুর আশ্রম, ট্রাংক রোড ও বড় বাজারের কালীমন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ গতকাল রোববার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে র্যাব অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এসব ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে একটি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দুটিসহ মোট তিনটি মামলা করা হয়েছে।
এদিকে আজ সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন ফেনীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, আশ্রম পরিদর্শন করেন।
পুলিশ জানায়, র্যাব ও পুলিশের অভিযানে মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফেনী মডেল থানা–পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তিনজনকে। তাঁরা হলেন ফেনী পৌরসভার মাস্টারপাড়ার আবদুল মান্নান (৪৬), ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের পূর্ব মোটবী গ্রামের এনামুল হক রাকিব (২০) ও ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দক্ষিণ ডেমরা এলাকার মো. মিরাজ (৩৩)। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন ফেনী পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আহনাফ তৌসিফ মাহমুদ লাবিব (২২), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার আমান সরকার বাজার এলাকার ফয়সল আহম্মেদ আল আমিন (১৯) ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের হাফেজ আবদুস সামাদ জুনায়েদ (১৯)।
তৌসিফ মাহমুদ লাবিবকে উস্কানিদাতা, হামলার পরিকল্পনাকারী ও নাশকতাকারীদের হোতা হিসেবে উল্লেখ করেছে র্যাব। র্যাব জানায়, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী বড় মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে তাঁর দুই বন্ধু মুন্না ও সফীকে নিয়ে হাতে এক বোতল পেট্রোলসহ কালীমন্দিরে যান। সেখানে মন্দিরের পুরোহিতকে মারধর ও মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এ ঘটনায় র্যাব ফেনী ক্যাম্পের সুবেদার (বিজিবি) মো. কামাল হোসেন বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন জানান, র্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার ছয়জনকে আজ ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়ে প্রত্যেককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়।
চট্টগ্রামের ডিআইজির ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব হামলা করছে। পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধীরা গ্রেপ্তারও হচ্ছে।
এ সময় ফেনীর পুলিশ কর্মকর্তারা ছাড়াও ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মিয়াজী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি শুসেন চন্দ্র শীল, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুখদেব নাথ তপনসহ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও ঐক্য পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।