বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ২০২১ সালকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের জন্য দারুণ একটি বছর হিসেবে উল্লেখ করে ২০২২ সালে এ সম্পর্ককে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। প্যারিস সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্যারিসে সৌজন্য সাক্ষাতের পর এস জয়শঙ্কর তাঁর টুইটে এ প্রতিশ্রুতি দেন।

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এখন ফ্রান্স সফর করছেন। আজ মঙ্গলবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মনে করেন, মুজিব চিরন্তনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের কারণে ২০২১ সাল দুই দেশের সম্পর্কের জন্য বিশেষ স্থান হিসেবে গণ্য হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে পেরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বিশ্বের ১৮ দেশের রাজধানীতে সফলভাবে যৌথ অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। এস জয়শঙ্কর এ বছরের প্রথমার্ধে দিল্লিতে যৌথ পরামর্শক কমিটির (জেসিসি) বৈঠকে অংশ নিতে আব্দুল মোমেনকে আমন্ত্রণ জানান। জেসিসি বৈঠকের আগে তাঁরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকগুলো শেষ করার ওপর জোর দিয়েছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির ওপর আবার গুরুত্ব দিয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে তাঁর সরকারের অবস্থান তুলে ধরেছেন। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনের আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিতে সম্মত হয়েছেন।

এদিকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আগামীকাল বুধবার দুই দিনের সফরে ভারতে যাচ্ছেন। এ সফরের সময় আগামী বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে জেসিসির আলোচ্যসূচি এবং এ বছরের শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষে এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রস্তুতি চলছে। গত বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। ওই সফরের সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান।

দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের শীর্ষ বৈঠককে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আগামী কয়েক মাসে সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে নানা পর্যায়ের বৈঠকের কথা রয়েছে। এর মধ্যে মার্চে বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠক দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া কাছাকাছি সময়ে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) সইয়ের বিষয়ে যৌথ সমীক্ষা নিয়ে গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি বৈঠক হতে পারে।