বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরও ৫৭ জন!

জাতীয় পার্টি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে ৫৭টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। কারণ, এসব আসনে মাত্র দুজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ গত মঙ্গলবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। গতকাল বুধবার তিনি মন্ত্রিসভা ও উপদেষ্টার পদ থেকে তাঁর দলের নেতাদের সরে দাঁড়াতে বলেছেন।
এবারের সংসদ নির্বাচনে মোট ৬১টি আসনে দুজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ৫৭টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি। বাকি চারটির একটিতে জাতীয় পার্টি-জেপি, একটিতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
ইতিমধ্যে সাতটি আসনে একটি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মনোনয়নপত্র জমাকারীরা প্রত্যাহার করলে তাঁরাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। সে ক্ষেত্রে সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস তৈরি হবে। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৪৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন।
জাতীয় পার্টি সরে গেলে আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ (গোপালগঞ্জ-৩) বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (সুনামগঞ্জ-২) শওকত আলী (শরীয়তপুর-২), সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১), ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫), আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ (বরিশাল-১), নুরুল ইসলাম নাহিদ (সিলেট-৬), মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (চাঁদপুর-২), রাজিউদ্দিন আহমেদ (নরসিংদী-৫), মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১), খন্দকার মোশাররফ হোসেন (ফরিদপুর-৩), ওমর ফারুক চৌধুরী (রাজশাহী-১), মির্জা আযম (জামালপুর-৩), কামরুল ইসলাম (ঢাকা-২), এ বি তাজুল ইসলাম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬) প্রমুখ।
আরও যাঁদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাঁরা হলেন: দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), এ এ মারুফ সাকলান (নীলফামারী-৪), আহসানুল হক চৌধুরী (রংপুর-২), আবদুল মান্নান (বগুড়া-১), আকরাম হোসেন (বগুড়া-২), আনসার আলী মৃধা (বগুড়া-৩), সাধনচন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১), মো. শহিদুজ্জামান বাবলু (নওগাঁ-২), ইসরাফিল আলম (নওগাঁ-৬), শফিকুল ইসলাম (নাটোর-২), ইসহাক হোসেন তালুকদার (সিরাজগঞ্জ-৩), শামসুর রহমান শরীফ (পাবনা-৪), রুহুল হক (খুলনা-৬), মাহবুবুর রহমান (পটুয়াখালী-৪), নূরুন্নবী চৌধুরী (ভোলা-৩), আবদুল্লাহ আল ইসলাম (ভোলা-৪), শরীফ আহমেদ (ময়মনসিংহ-২), ইফতেখার উদ্দিন (নেত্রকোনা-৩), রেবেকা মোমিন (নেত্রকোনা-৪), ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (নেত্রকোনা-৫), নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩), ফজলে নূর তাপস (ঢাকা-১০), আসাদুজ্জামান খান (ঢাকা-১২), এনামুর রহমান (ঢাকা-১৯), এম এ মালেক (ঢাকা-২০), মেহের আফরোজ (গাজীপুর-৫), নজরুল ইসলাম (নারায়ণগঞ্জ-২), মোশাররফ হোসেন (নারায়ণগঞ্জ-৩), কাজী কেরামত আলী (রাজবাড়ী-১), জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), আবদুর রহমান (ফরিদপুর-১), নাহিন রাজ্জাক (শরীয়তপুর-৩), আবু জাহির (হবিগঞ্জ-৩), আবদুল মজিদ (কুমিল্লা-২), তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), আ হ ম মুস্তাফা কামাল (কুমিল্লা-১০), শামসুল হক ভূঁইয়া (চাঁদপুর-৪), রফিকুল ইসলাম (চাঁদপুর-৫), এ কে এম শাহজাহান (লক্ষ্মীপুর-৩), মোশাররফ হোসেন (চট্টগ্রাম-১) ও জাফর আলম (কক্সবাজার-১)।
এবারের নির্বাচনে ২০টি দলের মোট এক হাজার ১০৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির পক্ষে জমা দিয়েছেন ২৪৮ জন। দলটি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে প্রার্থীর সংখ্যা আট শর ঘরে এসে ঠেকবে। যা হবে অতীতের যেকোনো নির্বাচনের প্রার্থীর সংখ্যার চেয়ে কম।