বিয়ের ৩ মাসেই লাশ হলেন লিজা

লিজা বেগম
লিজা বেগম

তাঁদের বিয়ে হয়েছিল মাত্র তিন মাস আগে। বিয়ের পর স্বামী যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। স্ত্রী অপেক্ষায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার ফ্ল্যাটবাড়ির বারান্দায় মিলল স্ত্রীর লাশ।

গতকাল শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকার ‘কর্ণারভিউ’ নামের ফ্ল্যাটবাড়ির সপ্তম তলার কক্ষ থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর নাম লিজা বেগম (২৪)। স্বামী মাহতাব উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী।

প্রবাসীর পরিবারের দাবি, লিজাকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে যেতে কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দেওয়ায় ক্ষোভে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে লিজার স্বজনেরা বলছেন, লিজাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বারান্দায় লাশটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। সুরতহাল প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পুলিশও বলছে, বারান্দায় লাশটি ঝুলন্ত থাকলেও পা মেঝেতে ছিল। আত্মহত্যার মরদেহ এভাবে দেখা যায় না। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পরিবার সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজারের কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে লিজা বেগমের সঙ্গে গত ৪ আগস্ট পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হাটবন গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের। বিয়ের পর থেকে সিলেট নগরের ফ্ল্যাটবাড়িতে নিজের পরিবারের সঙ্গে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মাহতাব। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। লিজার মামা ইকবাল আহমদ চৌধুরী বলেন, মাহতাব উদ্দিন প্রথম বিয়ে গোপন রেখে লিজাকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর প্রথম বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে লিজার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিক্ততায় গড়ায়। সম্প্রতি মাহতাব যাওয়ার পর থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা নানাভাবে নির্যাতন করতেন বলে তাঁরা শুনেছেন।

এদিকে ওই বাড়িতে মাহতাবের পরিবারের কারা থাকতেন, এ বিষয়ে পুলিশও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। কর্ণারভিউয়ে গিয়েও মাহতাবের পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে সপ্তম তলায় মাহতাবের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী একজন বললেন, মাহতাব দেশে থাকাকালে লিজার সঙ্গে নিয়মিত ঝগড়া হতো। 

সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যায় প্ররোচনা কি না, দেখা হচ্ছে।