‘বুড়িগঙ্গা দেখলে দেশের পরিবেশের অবস্থা বোঝা যায়’
‘আমরা কেমন মানুষ, আমাদের সরকার কেমন, দেশের পরিবেশ কেমন, তা বুড়িগঙ্গা নদী দেখলে বোঝা যায়। ঢাকা শহরে এত খালবিল ছিল, এগুলো কোথায় গেল।’ এমন প্রশ্ন উঠেছে রাজধানীর একটি গোলটেবিল বৈঠকে। আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ঢাকা সিটিকে ধুলা ও দূষণমুক্ত রাখতে সিটি করপোরশেনর দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এই বৈঠকের আয়োজন করে নগর উন্নয়ন আন্দোলন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, পরিবেশের সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কযুক্ত। পরিবেশবান্ধব কেউ নগরপিতা হলে পরিবেশ ভালো থাকবে। বিজ্ঞান বিশ্বকে অনেক দূর নিয়ে গেছে। তাই বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সরকার কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগ্রহী হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, দেশের পরিবেশ সর্বনাশের প্রান্তে চলে গেছে। যখন সারা পৃথিবী কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসছে, তখন দেশে এসব করা হচ্ছে।
ইটের ভাটা, যানবাহন, নির্মাণসামগ্রী, জীবাশ্ম জ্বালানি—এগুলো পরিবেশকে দূষিত করছে বলে জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এমাদুল হুদা। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে সকালে এক রাস্তা খুঁড়ে এক সংস্থা, বিকেলে খুঁড়ে অন্য সংস্থা। অথচ বিদেশে উন্নয়ন হয় দীর্ঘমেয়াদি।’
রাজধানীতে শব্দদূষণ সবচেয়ে বড় দূষণ বলে মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন। তিনি তাঁর করা একটি গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে বলেন, রাজধানীর শাহবাগে ৩০ জনের কানের পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁর মধ্যে অন্তত ১০ জন কানে কম শোনে বা একেবারেই শোনে না। এর মধ্যে তিনজন কানে শোনার ক্ষমতা হারিয়েছেন শব্দদূষণের কারণে।
নগর উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু টাকাগুলো কোথায়? দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ব্যর্থতার কারণে সব ব্যর্থ হয়ে গেছে।