ব্যবসায়ী মোশারফকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন হত্যা মামলার রায়ে তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আকতার ও রাসেল ওরফে নূরুন্নবীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি তাসলিমার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আর পলাতক আসামি রাসেল আত্মসমর্পণ করার বা গ্রেপ্তার হওয়ার পর রায় কার্যকর হবে।
রায়ে বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে ১৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় তাসলিমা ও রাসেলকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন চাল ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন তাসলিমা। ২০০৭ সালে তিনি তাহমিনা আকতারকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মোশারফের প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। ওই বাসার ভাড়াটে ছিলেন আসামি রাসেল। তাঁর সঙ্গে তাসলিমার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে বাধা দেওয়ায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ২০০৭ সালে মোশারফ হোসেনকে ঘুমের বড়ি খাওয়ানোর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর লাশ ঘরের পাটাতনের নিচে পুঁতে রাখেন আসামিরা। রাসেল পরে মোশারফের ভাই আবদুল জলিলের কাছে ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেখানো মতে মোশারফের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবদুল জলিল বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে তাসলিমা ও রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ওই বছরের ১৩ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাসেল জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত কৌঁসুলি আবদুস সাত্তার। তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী শাহাবুদ্দিন মিয়া। তাসলিমার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ও পলাতক রাসেলের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শহীদ উজ জামান।