কথায় বলে, তাস মানে নাশ। অথচ এই তাস খেলেই বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখছেন এক ঝাঁক তরুণ বাংলাদেশি। তাস যাঁরা খেলেন তাঁরা বলতে পারেন, খেলাটা যেমন উপভোগ্য, তেমনি মেধার ব্যবহার আছে। বলা হয়ে থাকে, ৫২ কার্ডের ৫৩ রকমের খেলা আছে। সত্যিই তাসের আছে অনেক রকমের খেলা।
তবে বিশ্বব্যাপী জাঁকজমকভাবে খেলা হয়ে থাকে ‘ডুপ্লিকেট ব্রিজ’। এই ডুপ্লিকেট কোনো নকল কিছু না। সব দলের জন্য একই কার্ডের খেলা একসঙ্গে চলতে থাকে। প্রতিপক্ষের কার্ড সেট দিয়েই ভিন্ন টেবিলে নিজ দলের খেলোয়াড় খেলে থাকেন। তাই ভাগ্যের ওপর এই খেলা কোনো রকম নির্ভর করে না, বরং দলের প্রত্যেক সদস্যের নিজেদের বোঝাপড়া আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে খেলে থাকেন।
বিশ্বের বেশির ভাগ উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে এই খেলা। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীরা খেলছেন এই খেলা। অংশগ্রহণ করছেন দেশ–বিদেশের বড় বড় টুর্নামেন্টে। এবার এই খেলা খেলতে দিল্লি যাচ্ছেন ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী। ১৭তম এইচসিএলে টিম ‘ব্রেন টেস্ট’ নামের দলটি বাংলাদেশের প্রথম মিক্সড দল (ছেলে-মেয়ের টিম) হিসেবে খেলতে যাচ্ছে দেশের বাইরে কোনো দেশে।
ভারতের নয়াদিল্লিতে ১৭তম এইচসিএল শুরু হবে ৫ আগস্ট, টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১০ আগস্ট। ‘ব্রেন টেস্ট’ দলটি গতকাল শনিবার নয়াদিল্লি পৌঁছেছে।
ব্রেন টেস্টের অধিনায়ক হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মেহেদী হাসান, সহ-অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের ছাত্র তরিকুল ইসলাম তারেক। দলের অপর সদস্যদের মধ্যে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র আল-হেলাল, ফার্মেসী অনুষদের সুমাইয়া আক্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের মাসুম বিল্লাহ তাহসান ও নাজমুল হক।
অধিনায়ক দলের প্রত্যাশা সম্পর্কে বলছিলেন, ‘আমরা প্রায় দুই বছর ধরে একসঙ্গে খেলছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও। অন্য সবার মতো পরিবারের অনেকেই তাস খেলাটাকে ভালোভাবে নিতে পারেনি। কিন্তু আমরা হতাশ না হয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেশের প্রতিনিধিত্ব সব সময় একটা স্বপ্নের মত ব্যাপার।’
সহ–অধিনায়ক তারেক বলেন, ছাত্র অবস্থায় অনেক সময়ই আসলে নষ্ট করে ফেলেছি এটা সেটা করে। কিন্তু একটা সময় পর যখন ব্রিজ খেলাটা শিখলাম, তখন বুঝলাম স্বপ্ন কী জিনিস, লক্ষ্য কী জিনিস। ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্রিজ খেলার মতো বিনোদন, প্রতিযোগিতা আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে নিঃসন্দেহে।’