ভালো কাজের চর্চা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় বন্ধুদের

প্রথম আলো বন্ধুসভার আয়োজনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা বিভাগীয় বন্ধু উৎসবের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে সারা দিন পার করেন বন্ধুরা
প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী ঢাকা বিভাগীয় বন্ধু উৎসব ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা আনিসুল হক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর কবির।

বেলা পৌনে ১১টায় মিলনায়তনে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বন্ধুসভার সদস্যরা প্রত্যেকেই মানুষকে ভালোবাসতে জানেন। তাঁরা দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ান তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। এ সময় ভালো কাজের চর্চা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপস্থিত বন্ধুসভার সদস্যরা।

সাজ্জাদ শরিফ আরও বলেন, বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ বৌদ্ধদের দ্বারা রচিত। এরপর মধ্যযুগের সাহিত্য চর্চা হয়েছে হিন্দুদের হাতে। আবার প্রথম অসাম্প্রদায়িক সাহিত্য চর্চা শুরু করেন মুসলমানরা। সনেটের প্রচলন, মহাকাব্য রচনা করেছেন খ্রিষ্টান কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এভাবে বাংলা সাহিত্য সারা বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। সাহিত্যের মতো দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

আনিসুল হক বলেন, বিল গেটস এক সেমিনারে বলেছিলেন, একবার পরীক্ষায় কয়েকটি বিষয়ে তিনি ফেল করেন, কিন্তু তাঁর এক বন্ধু সব বিষয়েই পাস করেন। পরে গেটসের বন্ধু মাইক্রোসফটের একজন প্রকৌশলী হন আর বিল গেটস হন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা। বিল গেটস ছোটবেলা থেকেই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, আর এই স্বপ্ন দেখার রসদ জুগিয়েছিল বই পড়ার অভ্যাস। তাই বড় হতে হলে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই।

মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘বন্ধুসভার সদস্যরা দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও মানবিক সহযোগিতার মতো ভালো কাজের মাধ্যমে দেশের সেবা করছে।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা মোহিত কামাল, কোডারসট্রাস্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউল গণি ওসমানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারম্যান শান্তা তাওহীদা প্রমুখ। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উত্তম রায় ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক।

সভা চলাকালে প্রথম আলোর ৫০ লাখ পাঠক উদ্‌যাপনের ভিডিও প্যাকেজ নির্মাণের জন্য পাঁচটি বন্ধুসভাকে পুরস্কৃত করা হয়। মোট ৪২টি বন্ধুসভা ভিডিও তৈরি করে। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেট্রোপলিটন কলেজ, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বগুড়া বন্ধুসভার সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।

পরে গত ঈদুল ফিতরে ‘সহমর্মিতার ঈদ’ শিরোনামে মানবিক সহায়তার জন্য কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রংপুর, সিলেট, ভোলা, ঠাকুরগাঁও, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিয়ান ও চীন বন্ধুসভাকে ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।

বেলা দেড়টায় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির আয়োজনে বন্ধুসভার সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। বিকেল পাঁচটায় জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় রম্য বিতর্ক। পরে একই স্থানে বিভিন্ন বন্ধুসভার সদস্যদের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ঢাকা বিভাগের মোট ৩৩টি বন্ধুসভার সদস্যরা উৎসবে যোগ দেন।এই উৎসবে আয়োজন সহযোগী ছিল সিটি ব্যাংক।