মাদকের নতুন রুটের বিষয়ে ভারতকে তথ্য দিল বাংলাদেশ
ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা মাদকের বিভিন্ন রুটের বিষয়ে নয়াদিল্লিকে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্রপথে মাদক চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও তাদের জানানো হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর মহাপরিচালক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সপ্তম দ্বিপক্ষীয় ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুস সবুর মণ্ডল।
বুধবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত অনলাইনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আরও ছয়টি দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দুই মহাপরিচালকের ভার্চ্যুয়াল সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুস সবুর মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে মাদক পাচারের নতুন নতুন রুট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের কিছু তথ্য দিয়েছি। তারাও কিছু তথ্য দিয়েছে।’
তিনি বলেন, দুই দেশের সীমান্ত থাকায় উভয় দেশ আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব বহন করে। আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য দুই দেশই ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনে ইয়াবা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ভারতের কিছু অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচার হয়। সেটিও ভারতকে অবহিত করা হয়েছে।
আবদুস সবুর মণ্ডল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মাদক পাচারে সমুদ্রপথ ব্যবহার করা হচ্ছে। সমুদ্রপথে ইয়াবা পাচার বেড়েছে। কারণ, স্থলপথগুলোতে কড়াকড়িতে হয়তো সমুদ্রপথে আসছে। ইয়াবার তুলনায় আইস আরও বেশি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে উভয় দেশ তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, সমস্যাগুলো ভারতকে বলা হয়েছে। তারা সীমান্তের বেশ কটি ফেনসিডিল কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করে মাদক সমস্যা সমাধানে অগ্রসর হতে হবে।
মহাপরিচালক সবুর মণ্ডল বলেন, গত ডিসেম্বরে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তারা বাংলাদেশের বিষয়গুলো জানে। মিয়ানমারের সরকার যদি ব্যবস্থা নিত, তাহলে হয়তো এ রকম আসত না। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। উভয় দেশই বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার (বিমসটেক, সার্ক, কমনওয়েলথ ইত্যাদি) সদস্য। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও ভারত মাদকদ্রব্য চোরাচালান এবং মাদক–সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে একযোগে কাজ করছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সভায় উভয় পক্ষই সমুদ্রপথ ব্যবহার করে মাদক চোরাচালান এবং মাদক সন্ত্রাসীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন রুট সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, রাসায়নিক ব্যবস্থাপনাবিষয়ক নীতিমালা ও বিধিবিধান নিয়ে তথ্য বিনিময়, ফলপ্রসূ অপারেশনের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা বিনিময়, মাদকবিষয়ক প্রাসঙ্গিক অপরাপর সম্যক তথ্য বিনিময়ের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সবুর মণ্ডল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো আগামী দিনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে মাদকদ্রব্য এবং মাদক–সন্ত্রাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আরও অধিকতর ভূমিকা রাখবে।’