মানসিক স্বাস্থ্য সত্যিকারেই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ: সায়মা ওয়াজেদ হোসেন

সায়মা ওয়াজেদ হোসেন

নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডারস এবং অটিজম সম্পর্কিত বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্য সত্যিকারেই একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যা মোটেও উপেক্ষা করা যায় না। কারণ, ২০৩০ সালের মধ্যে সকল দেশ সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ (ইউএইচসি) অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে ইম্পেরিয়াল কলেজের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ গবেষণা নেটওয়ার্কের একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে শুক্রবার তিনি মূল বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সায়মা ওয়াজেদ বলেন, ‘২০৩০ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডার অংশ হিসেবে সকল দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি অর্জন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া কোনো স্বাস্থ্য হতে পারে না এবং স্বাস্থ্য ব্যতীত টেকসই উন্নয়ন হতে পারে না।’

সায়মা বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের জন্য রূপরেখা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁর পরিকল্পনা তুলে ধরেন। প্রকল্পটি ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (ইউকেআরআই) গ্লোবাল চ্যালেঞ্জস রিসার্চ ফান্ড থেকে ইম্পেরিয়ালের অর্থে পরিচালিত।

বাংলাদেশি সহযোগীদের মধ্যে রয়েছে আইসিডিডিআরবি, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন, জেপিজিএসপিএইচ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের অংশীদারদের মধ্যে রয়েছে চ্যাথাম হাউস, পূর্ব লন্ডন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়।

মন প্রথম (মাইন্ড ফার্স্ট) গবেষণা সহযোগী প্রতিষ্ঠান পরিষেবাগুলো শক্তিশালী করতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে বাংলাদেশের সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের সাথে সংহত করতে সহায়তা করার জন্য একাধিক গবেষণা চালাচ্ছে।

ইম্পেরিয়াল এবং চ্যাথাম হাউসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রিবর্গ এবং বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের এবং যুক্তরাজ্যের অর্থায়ন সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ, স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা যোগ দেন। তারা বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করেন।

প্রকল্পের প্রধান ইম্পেরিয়ালের স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক মালা রাও বলেছেন, ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের আগে আমরা বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মন প্রথম সংস্থার অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরে আনন্দিত।’

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্য বিশ্ব জুড়ে একটি অবহেলিত জরুরি অবস্থা, যা মানুষের জীবনে কোভিড মহামারির প্রভাবে আরও খারাপ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সম্পর্কে এই উচ্চ পর্যায়ের গোল টেবিল আলোচনার অংশ হতে পেরে খুব আনন্দিত। আমি আশা করি এই অনুষ্ঠান একটি জোরদার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিক স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নে দিকনির্দেশনা দেবে।’

হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেন যে, এ প্রয়াস ২০১৮ সালের মানসিক স্বাস্থ্য আইনের ভিত্তিতে বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে সহায়ক হবে। এ ছাড়া, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের আরও মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ এই গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানের সুযোগ আরও বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।

ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমান বলেন, বাংলাদেশে মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড প্রোগ্রাম মানসিক অসুস্থতার প্রতি সামাজিক মনোভাব বদলাতে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচি জোরদার করার সম্ভাবনা রয়েছে।