যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তা
মার্কিন সংশোধনী মেনে চুক্তি করতে হবে
সংশোধিত আইন অনুযায়ী চুক্তি করবে কি না, তা বাংলাদেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের লেহি আইনের আওতায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অনুদান অব্যাহত রাখতে হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও সংশোধিত আইনে সম্মতি জানাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মার্কিন কংগ্রেস আইনটিতে সংশোধনী এনেছে। ফলে সহযোগিতার তালিকায় থাকা কোনো দেশের সংশোধিত আইনের বিষয়ে নিজেদের মতামত যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই।
লেহি আইনের আওতায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অনুদান অব্যাহত রাখার প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল রোববার মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ মন্তব্য করেছেন।
২০২১ সালে লেহি আইনে মার্কিন কংগ্রেস সংশোধনী এনেছে। এ আইন অনুযায়ী কোনো দেশের কোনো নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো ইউনিটের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলে তারা সহায়তা পাওয়ার যোগ্য হবে না।
নতুন সংশোধনী অনুযায়ী সহায়তা গ্রহণকারী দেশকে বিষয়টি মেনে চলতে লিখিত চুক্তি করতে হবে। লিখিত চুক্তি করার আগে কোনো নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা বাহিনীগুলোকে আর্থিক সহায়তার জন্য মনোনীত করা হবে না। নতুন এই সংশোধনী ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি বিশ্বের সব দেশের জন্য কার্যকর হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধিত আইন অনুযায়ী চুক্তির জন্য বাংলাদেশকে সময় বেঁধে দিয়েছিল। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে ওই সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হলেও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত মতামত জানায়নি। মার্কিন কূটনৈতিক সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী দুই পক্ষের কূটনৈতিক চ্যানেলে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। ফলে লেহি আইনের আওতায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অনুদান এখনো অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ সংশোধিত আইনে সম্মতি না জানালে এর প্রভাবটা কী হবে, জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, লেহি আইনের আওতায় সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই সম্মত রয়েছে। আইনটিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা খুবই সামান্য এবং পরিধিও সীমিত। বাংলাদেশ মতামত জানাতে সময় নিলে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও নিরাপত্তা সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে।
একই বিষয়ে অন্য এক মার্কিন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, লেহি আইনের আওতায় বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে। অর্থাৎ গত ২৫ বছর ধরে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। যে পরিবর্তন বিদ্যমান আইনটিতে আনা হয়েছে, তার পরিধি খুবই সীমিত।
লেহি আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের মতামত বা প্রস্তাব যুক্ত করার সুযোগ আছে কি না—এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তা বলেন, আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আইন। এতে পরিবর্তন যেটা আনা হয়েছে, সেটিও খুব সামান্য। কাজেই এখানে অন্য দেশের মতামত যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও রাজস্ব বিভাগ গত বছরের ডিসেম্বরে র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন র্যাব কি লেহি আইনের আওতায় কোনো সহায়তা পাবে কি না, জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউনটিবিলিটি অ্যাক্ট এবং লেহি আইন দুটি আলাদা আইন। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে।