মেয়র জাহাঙ্গীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল
জমিতে অবস্থানসংক্রান্ত এক মামলায় আদালতের আদেশ অনুসরণ না করায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা একটি আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
হাইকোর্টের ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ও গত ২১ জুন দেওয়া আদেশ (নিষেধাজ্ঞা) অমান্য করায় কেন তাঁদের বিরুদ্ধে অদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীরসহ চার ব্যক্তিকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অপর তিন ব্যক্তি হলেন জয়দেবপুরের পাইনশাল গ্রামের আলফাজ, পশ্চিম ডগরী গ্রামের হারুনুর রশিদ ওরফে ঠান্ডু ও বি কে বাড়ী গ্রামের ফজলুল হক।
এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ নভেম্বর গাজীপুর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে গত মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর আদালতে মামলা হয়।
এদিকে জাহাঙ্গীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমননার অভিযোগে ঢাকার গুলশানের বাসিন্দা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চলতি মাসে এ আবেদন করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আজিম খায়ের ও আবুল কালাম আজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
পরে আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সময় গাজীপুরের জয়দেবপুরের বিকে বাড়ী মৌজায় ১৬ দশমিক ৬৬ একর জমি কিনে আবাদ শুরু করেন আশরাফ উদ্দিন। জমির একাংশ নিয়ে নিম্ন আদালতের রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর রুল দিয়ে জমিতে জাহাঙ্গীর আলমসহ বিবাদীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন এবং আশরাফ উদ্দিন আহমেদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিতের আদেশ দেন। সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুন হাইকোর্ট রুলসহ বাকি জমিতে জাহাঙ্গীর আলমসহ বিবাদীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন। অথচ গত জুলাই মাসে জাহাঙ্গীরের লোকজন ওই জমিতে প্রবেশ করে তত্ত্বাবধায়ককে মারধর করে বের করে দেন, যা আদালতের আদেশের লঙ্ঘন। যে কারণে আদালত অবমননার আবেদনটি করা হয়।