রায় কার্যকর হলে সন্তুষ্ট হব: প্রফুল্ল
কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়। শহীদ অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। চারদিকে থমথমে অবস্থা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাড়িটি ঘিরে সংবাদমাধ্যম ও পাড়া-প্রতিবেশীর আগ্রহের অন্ত নেই। দারোয়ান জানিয়ে দিলেন, ‘ঢোকা নিষেধ।’
সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বড় অভিযোগ এই বাড়িকে ঘিরে। এখানে ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সাকা চৌধুরীর নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছিল নূতন চন্দ্র সিংহকে। দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে এই ক্ষত বুকে নিয়ে আছে সিংহ পরিবার।
গতকাল ছিল তাদের সেই ক্ষত জুড়ানোর দিন। কিন্তু মুখ খুলতেই নারাজ নূতন চন্দ্র সিংহের ছেলে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ। মামলাটির অন্যতম সাক্ষী প্রফুল্ল সকাল থেকেই ফোন বন্ধ করে বসেছিলেন। শুরু থেকেই তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবার মতো আমিও প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় পেয়েছি। রায় কার্যকর হলে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হব।’
গতকাল প্রফুল্ল কুণ্ডেশ্বরীর নিজ কার্যালয়ে বসেই টেলিভিশনে রায়ের সংবাদ দেখেছেন। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে প্রার্থনা সেরে তিনি টেলিভিশনের সামনে গিয়ে বসেন বলে জানা গেছে। কড়া নির্দেশ দিয়ে দেন যাতে কেউ ভেতরে না ঢোকেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সাক্ষাৎ পেতে।
এর আগে গত সোমবার প্রফুল্ল নিজ কার্যালয়ে বসে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে বাবার হত্যাকাণ্ড এবং মামলা নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘এত দিন পরে একটি বিচারের রায় হচ্ছে এটি স্বস্তির বিষয়। একসময় মনে করা হতো এটার কোনো বিচার হবে না।’ কুণ্ডেশ্বরী ভবনের আঙ্গিনায় নূতন চন্দ্র সিংহের আবক্ষমূর্তি। পাশে মন্দির। এই মন্দিরের সামনে নূতন চন্দ্রকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে জানান প্রফুল্ল। গতকাল রায় ঘোষণার আগে ও পরে কুণ্ডেশ্বরীর বাড়িটি ঘিরে ছিল পুলিশি পাহারা।
মূল সড়কের প্রধান ফটকে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক দলবল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এনামুল হক এ সময় প্রথম আলোকে বলেন, সবকিছু শান্ত রয়েছে। কোনো সমস্যা নেই।