সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘শখের বশে এসব মামলা নিয়ে আসবেন না। এ ধরনের মামলা (রিট) রিজেক্ট করা হলে এবার হেভি কস্ট (অনেক জরিমানা) দিয়ে রিজেক্ট (খারিজ) করা হবে।’
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এসব কথা বলেন।
এর আগে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ দুটি রিট শুনানির জন্য উপস্থাপন (মেনশন স্লিপ) করেন। একটি রিট হচ্ছে, ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ সময়ে পরিচয়পত্র দেখানো নিয়ে চিকিৎসক, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগ্বিতণ্ডা সূত্রে চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ বিচারিক কমিশনের মাধ্যমে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে করা। আর অপর রিটটি হচ্ছে সারা দেশে চলমান সর্বাত্মক লকডাউন স্থগিতের পাশাপাশি সরকারিসহ সব অফিস খুলে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চেয়ে করা।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে রিটের বিষয় তুলে ধরে ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, চলাচলের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। তাই লকডাউন নিয়ে রিটটি করা হয়েছে। আদালত বলেন, ‘আপনি শখের বশে এসব মামলা নিয়ে আসবেন না। আপনার লোকাস স্ট্যান্ডি (আবেদনের এখতিয়ার) আছে কি ? লোকাস স্ট্যান্ডি নেই, এটি আগে বলেছি। আচ্ছা, স্লিপ (দাখিল করা) দেন। তবে এ ধরনের মামলা (রিট) রিজেক্ট করা হলে এবার হেভি কস্ট (অনেক জরিমানা) দিয়ে রিজেক্ট (খারিজ) করা হবে।’
পরে ইউনুছ আলী আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, দুটি রিটের মধ্যে সর্বাত্মক লকডাউন স্থগিতের পাশাপাশি সরকারিসহ সব অফিস খুলে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি দাখিল করা হয়েছে। অপর রিটটি দাখিল করা হয়নি।
উল্লেখ্য, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ১৮ এপ্রিল ‘পরিচয়পত্র’ দেখানো নিয়ে চিকিৎসক, পুলিশ কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগ্বিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি পরদিন একই বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। সেদিন ওই আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘প্রয়োজনে ডাক্তার আসতে পারেন। এতে আপনার কিছু করার নেই। দেখা যায়, ডাক্তার সাহেব চ্যালেঞ্জ করেছেন পুলিশকে। তাই ডাক্তার আর পুলিশ বিষয়টি বুঝুক। তাই এটি আপাতত থাক।’
এলিফ্যান্ট রোডের নিরাপত্তাচৌকিতে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ১৯ এপ্রিল পৃথক বিজ্ঞপ্তি দেয়। পাল্টাপাল্টি বিবৃতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ২০ এপ্রিল একই বেঞ্চের নজরে এনে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশের আরজি জানান ইউনুছ আলী আকন্দ। তাঁর উদ্দেশে সেদিন আদালত বলেছিলেন, ‘আপনি তো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নন।’ এরপর বাগ্বিতণ্ডার ওই ঘটনা নিয়ে নিজে আবেদনকারী হয়ে ইউনুছ আলী আকন্দ রিট করেন।