শিশুহত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা কমে যাবজ্জীবন

সুপ্রিম কোর্ট
ফাইল ছবি

প্রায় এক দশক আগে কুমিল্লার দেবীদ্বারের জয়পুর গ্রামে শিশু পারভেজ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আল আমিনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির করা জেল আপিল খারিজ করে সাজা সংশোধন করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ আজ রোববার এ রায় দেন। একই সঙ্গে আল আমিনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ওই মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিনের সাজা বহাল রেখে ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে কারাগার থেকে জেল আপিল করেন আল আমিন। এর শুনানি শেষে ওই রায় দেওয়া হয়।

আদালতে আল আমিনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শিরীন আফরোজ শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
পরে আইনজীবী শিরীন আফরোজ প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলা প্রায় ১০ বছর ধরে আল আমিন কনডেমড সেলে আছেন। মামলার এজাহারে আল আমিনের নাম ছিল না। ঘটনার সময় তাঁর বয়স ছিল ২১ বছর। আল আমিনের অতীতে অপরাধ করার রেকর্ড নেই, এসব যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ দণ্ড সংশোধন করে আল আমিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

আইনজীবী সূত্রের তথ্যমতে, তৃতীয় শ্রেনিতে পড়ুয়া শিশু পারভেজকে খুঁজে না পেয়ে তার মা জোসনা বেগম ২০১০ সালের ৫ নভেম্বর দেবীদ্বার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর জয়পুর গ্রামের আড়াইবাড়ি দীঘির উত্তর পাশের ধানখেত থেকে শিশুটির খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে সেদিনই শিশুটির মা কয়েকজনের বিরুদ্ধে দেবীদ্বার থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটিতে ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লার আদালত আল আমিনের মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানান, নিম্ন আদালতের রায়ের পর আসামির মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। অন্যদিকে রায়ের বিরুদ্ধে আসামি হাইকোর্টে জেল আপিল করেন। এসবের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি আল আমিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন।