শেষ সময়ে গরুর দাম কিছুটা কম
দেড় লাখ টাকায় একটি গরু কিনেছেন বনশ্রী সি ব্লকের বাসিন্দা মাসুক মিয়া। তাঁর সঙ্গে দেখা হলো রাজধানীয়র আফতাবনগরের কোরবানির পশুর হাটে। বাড্ডা ইস্টার্ন হাইজিংয়ের খালি জায়গায় চলছে এ হাট। মাসুক মিয়া বলছিলেন, ‘গতকাল সোমবার দুপুরে হাটে এসেছিলাম। তখন এর চেয়েও ছোট গরুগুলোর জন্য বিক্রেতারা আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা দাম চেয়েছিল। আজকে সেই দাম কমে গেছে।’
রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে তুলনামূলকভাবে একটু কমে গেছে গরু ও খাসির দাম। হাটে ছোট আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৫০ হাজার টাকায়। মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১ লাখে। আর একটু বড় আকারের গরুর দাম পড়ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখের মধ্যে।
হাট ইজারা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সোমবার সারা রাত থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় হাটে ক্রেতার উপস্থিতি ছিল কম। সকালেও বৃষ্টির কারণে প্রত্যাশিত ক্রেতা আসেনি। এই পরিস্থিতিতে হাটে আনা বেশির ভাগ গরু অবিক্রীত রয়ে গেছে৷ আজ দুপুরের পরে ক্রেতারা হাটে আসতে শুরু করেছেন। এই সময়ে যারা হাটে এসেছেন, তারা তুলনামূলক কম দামে গরু কিনতে পারছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আফতাবনগর ও ভাটারা অস্থায়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আসা ক্রেতারা পছন্দের গরু কিনে বাসায় ফিরছেন কেউ গরু হাঁটিয়ে কেউ আবার পিকআপে করে। যেসব ক্রেতা হাটের দিকে যাচ্ছেন, তাঁরা হাট থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের কাছে জিজ্ঞেস করছেন চিরাচরিত প্রশ্ন, ‘গরু কত নিল, হাটে দাম কেমন?’এসব। কোরবানির পশু কিনে আসা ব্যক্তিদের বেশির ভাগের উত্তর, ‘বাজার ভাল, হাটে প্রচুর গরু আসছে। এ কারণে দামও কম রাখছে বিক্রেতারা।’
গরু কিনে হাট থেকে ফেরা ব্যক্তিদের চোখে ছিল আনন্দের ঝিলিক।
আফতাবনগরের হাট থেকে মালিবাগের ওয়াপদা সড়কের বাসিন্দা আরমান হোসেন যে গরুটি কিনেছেন, সেটা অস্ট্রেলিয়ান সংকর জাতের একটি গরু। ওজন প্রায় ৯ মণ হবে। বাসা কাছে হওয়ায় হাট থেকে পায়ে হেঁটেই গরু নিয়ে ফিরছিলেন তাঁরা। পথে একটু জিরিয়ে নেন সবাই।
আরমান বলেন, ‘প্রথম দুদিন হাটে এসে মনে হচ্ছিল, এবারও হয়তো পছন্দের গরু কিনতে পারব না। বিক্রেতারা কয়েক গুণ বেশি দাম চাইছিলেন। তবে আজকে যে গরুটা কিনলাম, আগের মতো দাম হাঁকালে কিনতেই পারতাম না।’
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবারিয়ার পাইকার আনোয়ার হোসেন আফতাবনগর হাটে ১০টি গরু নিয়ে এসেছিলেন। প্রায় আট মণ ওজনের গরু বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। সব মিলিয়ে তাঁর ৯০ হাজারের মতো লোকসান হয়েছে বলে দাবি তাঁর। এর মধ্যে একটি গরু আনার সময় পায়ে ব্যথা পাওয়ায় ওই গরুটি ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয় কসাইয়ের কাছে। গরুটি কিনেছিলেন ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।
আনোয়ার হোসেন বলেন, লোকসান হলেও বিক্রি করেছি। কারণ গরু ফেরত নিলে আরও লোকসান হয়। আর কোরবানির পর গরুর আর দামও পাওয়া যায় না।