শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা এসব দাবি জানান।
সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যে পে-কমিশন করা হয়েছে, এ জন্য আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু শ্রমিকদের জন্য বেতন বাড়ানো হয়নি, এমনকি বেতন বাড়ানোর আভাসও দেওয়া হয়নি। অথচ একই বাজারে কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারী সবাই যান।’ তিনি শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিশন গঠন করার পাশাপাশি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানান।
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, বিদ্যমান শ্রম আইন ও বিধিমালা শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আইন ও বিধিমালায় মালিকদের স্বার্থই অগ্রাধিকার পেয়েছে।
ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, সাবেক শ্রমমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বিধিমালা নিয়ে বৈঠক হয়েছিল। চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে আরও বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। একদিন রাতের অন্ধকারে এই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়, যার অনেকগুলোই শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি যদি না মানা হয়, তাহলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করা হবে।’
এর আগে সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সংগঠনটির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। সেখানে তিনি বলেন, শ্রম বিধিমালায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ শ্রমিকদের সদস্য হওয়ার বিধান ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে জটিল ও কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ করায় শ্রমিকদের তৃতীয় পক্ষের ইচ্ছামাফিক মজুরি দাসে পরিণত করা হচ্ছে। ঘোষণাপত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নির্দেশনা অনুসরণ করে শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
পরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। এতে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, সহসভাপতি এ কে এম মাহবুব আলম, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ অংশ নেন। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে ফোয়ারা-তোপখানা রোড-পুরান পল্টন প্রদক্ষিণ করে আবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।