শ্রমিকেরা সরব না হলে তদন্ত কমিটি সরকারের আজ্ঞাবহ হবে: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডে হতাহত হওয়ার ঘটনায় শ্রমিকেরা যদি সরব না হন, তাহলে তদন্ত কমিটি সরকারের আজ্ঞাবহ হবে। সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ডসহ এ ধরনের সব ঘটনার তদন্ত কমিটির দিকে ইঙ্গিত করে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত-আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আদায় ও অগ্নিকাণ্ডের পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের গুদামে আগুন অহরহ লাগছে। প্রতিবারই আগুন লাগে, প্রতিবারই মানুষ মারা যায়, প্রতিবারই তদন্ত কমিটি হয়। তদন্ত কমিটি নিজের মতো করে নীরব থাকে।’
পুরান ঢাকাসহ সীতাকুণ্ডের ঘটনায় শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যতটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার, সেই তুলনায় যথেষ্ট হয়নি বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য। তিনি বলেন, শ্রমিকদের এমন বিক্ষোভে সরকার ও মালিকপক্ষের টনক নড়বে না।
গার্মেন্টস পণ্য ও খাদ্যদ্রব্য যে স্থানে থাকে, সেখানে দাহ্য পদার্থ রাখার বিধান কীভাবে থাকে—সে প্রশ্ন তুলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকারের অদক্ষতা, অযোগ্যতাস ও অদূরদর্শিতার কারণে এমনটা হয়েছে। এখানে দায়ভার তাদেরও নিতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনে করেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে যে পরিমাণ মানুষ মারা যায়, সে পরিমাণ বনের পশুপাখিও মারা যায় না। তিনি আরও বলেন, ‘বন্য প্রাণী মারা আইনে নিষেধ আছে, কিন্তু মানুষ মারা নিষেধ আছে কি না আমার জানা নেই। মানুষ এভাবে মারা যাচ্ছে, কিন্তু বিচার হচ্ছে না।’
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতার আশঙ্কা, শ্রমিকদের মধ্যে বিভাজন থাকলে মালিকপক্ষ তাঁদের শোষণ করতে পারে। তাঁর অভিযোগ, এখন কলকারখানার মালিকপক্ষে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের লোকজন রয়েছে। তাঁরা শিল্প-কলকারখানা বিস্তার করছেন না, বরং সংকুচিত করছেন। নিরাপত্তার অভাবে ব্যবসায়ীরাও এখন বিদেশে টাকা পাচার করছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের ঘটনা অগ্নিকাণ্ড নয়, বরং হত্যাকাণ্ড। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে এখানে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।