সরকারি চাকরি পেলেন সাহসী ঝরণা বেগম
অবশেষে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে স্থায়ী সরকারি চাকরি পেয়েছেন রাজশাহীর সাহসী নারী ঝরণা বেগম। ইতিমধ্যে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের ১ এপ্রিল হরতাল চলাকালে রাজশাহী নগরে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের নির্মম হামলায় গুরুতর আহত পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করতে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গিয়েছিলেন ঝরণা। এ জন্য বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে স্বীকৃতিস্মারক ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে একটি স্থায়ী চাকরির আশ্বাস দেয়। কিন্তু তা দীর্ঘদিন বাস্তবায়িত হচ্ছিল না।
এ অবস্থায় গত ২৮ আগস্ট প্রথম আলোতে ‘সাহসী ঝরণার সঙ্গে এমন আচরণ কেন!’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর অসংখ্য পাঠক প্রথম আলো কার্যালয়ে যোগাযোগ করে ঝরণাকে আর্থিক সহায়তা ও চাকরি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তখনই অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকেও ঝরণার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ১৮ নভেম্বর তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে যোগ দেন।
দুই সন্তানের জননী ঝরণা নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাড়ি পাবনায়। বড় ছেলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। একসময়ের বিউটি পারলারের কর্মী ঝরণাকে এর আগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে অস্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
ঝরণার চাকরির বিষয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চাকরি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ঝরণার ছিল। পাশাপাশি তাঁর সাহসিকতার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
সরকারি চাকরি পেয়ে প্রথম আলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ঝরণা। গতকাল বুধবার তিনি প্রথম আলো কার্যালয়ে এসে আবেগে কেঁদে ফেলেন।
ঝরণা বেগম বলেন, ‘আজ আমার এত ভালো একটি স্থায়ী চাকরি পাওয়া সম্ভব হয়েছে শুধু প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জন্য। সেদিন কিছু পাওয়ার আশায় পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করতে যাইনি। গিয়েছিলাম বিবেকের তাড়নায়।’
ঝরণা বলেন, ‘প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর আমার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আমি সন্তানদের ভালোভাবে পড়ালেখা করাতে পারব।’