তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান বাঁ চোখে আদৌ দেখবেন কি না বা কতটুকু দেখবেন, তা নিশ্চিত হতে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে গতকাল শুক্রবার অস্ত্রোপচার শেষে আজ শনিবার তাঁর চোখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়। এরপর চিকিৎসক এই কথা জানান।

সিদ্দিকুরের বন্ধু ও সহপাঠী শেখ ফরিদ প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্দিকুরের সঙ্গে থাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহসান জানিয়েছেন যে দেশে অপারেশনের পর সিদ্দিকুর বাঁ চোখের এক পাশ দিয়ে আলোর উপস্থিতি টের পাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু চেন্নাই যাওয়ার পর সেই আলো আর দেখছিলেন না। গতকালের অস্ত্রোপচারের পর এখন আবার পাশ দিয়ে কিছু আলো দেখছেন বলে বলছেন। তিনি কতটুকু দেখবেন বা আদৌ দেখবেন কি না, তা জানতে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় অপেক্ষা করতে হবে।

শেখ ফরিদ বলেন, সিদ্দিকুর, তাঁর সঙ্গে থাকা বড় ভাই নায়েব আলী ও চিকিৎসক জাহিদ আহসান ১১ আগস্ট ফিরে আসতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি ঘোষণার দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে আন্দোলনে গিয়ে ‘পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলের’ আঘাতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্দিকুরের দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই দিনই তাঁকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর দুই চোখে অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসকেরা বলেন, সিদ্দিকুরের ডান চোখের দৃষ্টি নেই। বাঁ চোখে এক দিক থেকে আলো ফেললে আলোর উপস্থিতি টের পাচ্ছেন। দৃষ্টি ফেরার ‘ক্ষীণ’ আশা আছে।

২৭ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সিদ্দিকুরকে চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়। পরের দিন সেখানকার চিকিৎসক ধনশ্রী রাত্রা সিদ্দিকুরের চোখ পরীক্ষা করে বলেন, চোখের ভেতরের আঘাত গুরুতর। অস্ত্রোপচারে যাওয়া ঠিক হবে কি না, এ জন্য তিনি দ্বিতীয় মতামতের জন্য চিকিৎসক লিংগম গোপালের কাছে রেফার করেছিলেন। লিংগম গোপাল মতামতে বলেন, অস্ত্রোপচারেও সিদ্দিকুরের চোখের দৃষ্টি ফিরবে না। তবে সিদ্দিকুরের সম্মতি থাকায় শেষ চেষ্টা হিসেবে গতকাল অস্ত্রোপচার করা হয়।