সিদ্ধিরগঞ্জে চার দিনে কয়েক শ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। গত চার দিনে ওয়ার্ডের পাঠানটুলি ও আইলপাড়া এলাকার প্রায় এক শ মানুষ ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে।
তবে এলাকার ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা চার শ ছাড়িয়েছে বলে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান। ওয়াসার পানি পান করে এলাকার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে তাঁরা দাবি করেছেন।
সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৯৬ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। পাশাপাশি একসঙ্গে অনেক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সিভিল সার্জন আরও জানান, ডায়রিয়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই এলাকায় চিকিৎসক দলের দুটি অস্থায়ী ক্যাম্প খুলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই অস্থায়ী ক্যাম্পের সদস্যরা এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ও খাওয়ার স্যালাইন বিতরণ করেছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে পানি ফুটিয়ে পান করার জন্য বলা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ঢাকা ওয়াসার ল্যাবরেটরি থেকে একটি দল এসে ওই এলাকার পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেছে। এ ছাড়া এলাকাবাসীর পানের জন্য ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে।
স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, ১ ডিসেম্বর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া, এনায়েতনগর, পাঠানটুলি এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ পর্যন্ত চার শতাধিক রোগী বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
এনায়েতনগরের বাসিন্দা মোহামঞ্চদ নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাসায় এনেছেন। কিন্তু এরপর তাঁর স্ত্রীও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওয়াসার পানি পান করেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। পাঠানটুলি এলাকার গৃহবধূ শিউলি জানান, তাঁর তিন বছরের মেয়ে উমেঞ্চ হাবিবা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এলাকার পলি আক্তার, সাদ্দাম, মোস্তাফিজ, লাকি, হাবিবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার পানি পান করার পর থেকেই তাঁদের পেটব্যথা শুরু হয়। এরপরই ডায়রিয়া শুরু হলে স্যালাইন খাওয়ার পরও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স মাসুদা খানম জানান, একসঙ্গে অনেক রোগী আসায় পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।