সুবহানের বিরুদ্ধে মামলার রায় যেকোনো দিন

মুহাম্মদ আবদুস সুবহান
মুহাম্মদ আবদুস সুবহান

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুহাম্মদ আবদুস সুবহানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় যেকোনো দিন ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সুবহানের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল বৃহস্পতিবার সুবহানের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি—কেস অ্যায়োটিং ভারডিক্ট) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মো. কায়সারের মামলাটিও এই ট্রাইব্যুনালে রায়ের অপেক্ষায় আছে। আর ট্রাইব্যুনাল-১-এ রায়ের অপেক্ষায় আছে দুটি মামলা। এগুলো হলো জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে মামলা।
সুবহানের বিরুদ্ধে মামলায় আসামিপক্ষের দেওয়া যুক্তি গতকাল খণ্ডন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ। তিনি সুবহানের সর্বোচ্চ সাজার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, অপরাধের বিচারের উদ্দেশ্য শুধু অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং ভবিষ্যতে সমাজে যেন কেউ অপরাধ না করে সেটাও নিশ্চিত করা।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিকী দাবি করেছেন, সুবহান সব অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
যুক্তি উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রায় সিএভি। দুই পক্ষই ভালোমতো যুক্তি দিয়েছে। তবে গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ উভয়েই নানা ধরনের কথা বলে। এমন কোনো কথা বলবেন না যাতে আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়।
এর আগে জামায়াতের প্রথম সারির সাতজন নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় হয়েছে। এর মধ্যে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সুবহানের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের নয়টি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়।
পাবনা জেলা জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আমির সুবহান একাত্তরে দলটির কেন্দ্রীয় শুররা সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর পাবনায় শান্তি কমিটি গঠিত হলে তিনি ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পরে সহসভাপতি হন। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে পুলিশ সুবহানকে আটক করে। ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে বন্দী আছেন।