সেন্ট্রাল হাসপাতালে আগুন, রোগীরা আতঙ্কিত
গ্রিন রোডে সেন্ট্রাল হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে আগুন লাগে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে রোগী ও তাঁদের অভিভাবকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন।
বেলা দেড়টার পরপর আগুন লাগে। তবে অনেকেই বলেছেন, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বেলা একটার পরপরই। বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো হাসপাতাল। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মী নিতাই চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, বেলা দেড়টার পরে হঠাৎ করে তিনি হাসপাতালের ভূতলের পার্কিং থেকে একটি শব্দ শুনতে পান। পরে দৌড়ে নিচে নেমে দেখেন, একটি গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে। হাসপাতালে রাখা ফায়ার এক্সটিংগুইশার (অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র) দিয়ে তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তিনি সরে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।
ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের পরিদর্শক নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগুন লাগার পরপরই পুলিশ এসে রাস্তা বন্ধ করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। এরপর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পার্কিংয়ের জায়গা থেকেই আগুন লেগেছে।
আগুন নেভানো শেষে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘণ্টা খানেক চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কী কারণে আগুন লেগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক ত্রুটি বা অন্য কোনো কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তবে আগুন নেভানোর পর পার্কিংয়ের জায়গায় গিয়ে দেখা গেছে, সেটি গোডাউনের মতো করে রাখা। রেফ্রিজারেটরের যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে নানা জিনিসপত্র সেখানে। এগুলোর কারণে আগুন লেগেছে কি না জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, হাসপাতালের পার্কিংয়ের জায়গা যেমন থাকার কথা, হাসপাতালে তেমনটি নেই। পার্কিংয়ের জায়গায় ফ্রিজের যন্ত্রাংশসহ নানা জিনিস ফেলে রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের অনেক রোগী ভয়ে বেরিয়ে আশপাশে আশ্রয় নিয়েছেন। গর্ভবতী এক নারীকে তাঁর স্বজনেরা স্ট্রেচারে করে হাসপাতালের উল্টো দিকের গলিতে নিয়ে রাখেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আতিয়া বেগম জানান, পার্কিংয়ে আগুন লাগলেও ভেতরে কোথাও আগুন লাগেনি। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণের পর বিকেল পাঁচটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রোগীরাও আস্তে আস্তে ফেরত আসেন। কীভাবে আগুন লেগেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শর্টসার্কিট হতে পারে। তবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’