চুয়াডাঙার জীবননগর উপজেলার বৈদ্ধনাথপুর গ্রামে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকের নিচে নেমে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় পিতা-পুত্রসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন বৈদ্যনাথপুর আবুল হাশেম (৫০), তাঁর ছেলে সুজন (২২), একই গ্রামের জালাল (৩৫), উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গঙ্গাদাশপুর গ্রামের জুয়েল (২৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জীবননগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বৈদ্ধনাথপুর গ্রামের একটি বাড়িতে শৌচাগারের জন্য বেশ কিছু দিন আগে নতুন করে সেপটিক ট্যাংকটি তৈরি করা হয়। ছাদ ঢালাইয়ের পর ঢাকনা দিয়ে ট্যাংকটি এত দিন ঢাকা ছিল। আজ বিকেলে ওই ট্যাংকের পাইপ সংযুক্ত করার গর্ত দিয়ে সুজন ও জালাল সেটির নিচে যান। কিছুক্ষণ ধরে তাঁদের সাড়াশব্দ না পেয়ে জুয়েলও ওই গর্ত দিয়ে ট্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তাঁরও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন ধারণা করেন।
সোহরাব হোসেন আরও বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে সুজনের বাবা হাশেমও ছেলেকে উদ্ধার করতে ট্যাংকটির ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তাঁরও সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয় লোকজন ট্যাংকটির ঢাকনাটি ভেঙে ফেলেন। এরপর ওই চারজনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
সোহরাব হোসেনের মতে ঢাকনা দিয়ে সেপটিক ট্যাংকটি ঢাকা থাকায় ভেতরে কার্বন মনো অক্সাইড গ্যাস জমে ছিল। আর ওই গ্যাস ভর্তি ট্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করায় চারজনই অক্সিজেনের অভাবে মারা যান।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির এ দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রত্যেকটি লাশই নিজ নিজ পরিবারের হেফাজতে রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ময়নাতদন্তের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাফিজ বলেন, মৃত চারজনের পরিবারকেই ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর বাড়ির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে এ দুর্ঘটনার একদিন আগে চট্টগ্রামে সেপটিক ট্যাংকের নিচে নেমে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় তিন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।