সোহাগপুর বিধবাপল্লি এখন 'বীরকন্যা পল্লি'

বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম বলেছেন, আজ থেকে আর বিধবাপল্লি নয়। সোহাগপুর গণহত্যাস্থলের নতুন নাম ‘বীরকন্যা পল্লি’। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি বিজড়িত সোহাগপুর বিধবাপল্লিতে বিধবাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও শীতবস্ত্র বিতরণকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।

শফিউল্লাহ বীর উত্তম বলেন, ‘যাঁদের রক্তে দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি, তাঁদের রক্তে রঞ্জিত পবিত্র এ ভূমি বিধবাপল্লি হতে পারে না। এখানকার সবাই বীরকন্যা।’ তিনি জামায়াতের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যখন যুদ্ধ করেছি তখন তারা পাকিস্তানের পক্ষে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এই সংগঠনের লোক কখনো বাঙালি হতে পারে না, আমরা তাদের নাগরিকত্বও চাই না। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। এ দেশে আমরা থাকব, পাকিস্তানপন্থী কেউ থাকতে পারবে না।’

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব বলেন, পাকিস্তান যেভাবে কথা বলছে, বাংলাদেশের কিছু নেতা-নেত্রী সেভাবে কথা বলছে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের পক্ষ থেকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।

বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতৃবৃন্দ বিকেল সাড়ে তিনটার সময় একাত্তরে স্বজন হারানো সোহাগপুরের বিধবাপল্লিতে যান। এ সময় বিধবারা অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় কে এম শফিউল্লাহ ও হারুন হাবিব ছাড়াও সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদ, ঢাকা বিভাগের সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি একে আজাদ পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তৃতা দেন। পরে ৩০ জন বিধবার মাঝে দুটি করে কম্বল ও একটি করে সোয়েটার বিতরণ করা হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী সোহাগপুর গ্রামে পাক হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় ছয় ঘণ্টার তাণ্ডব চালিয়ে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ১৮৭ জন পুরুষকে হত্যা করে। এরপর থেকেই সোহাগপুর গ্রামটির নাম পাল্টে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সোহাগপুর বিধবাপল্লি নামে পরিচিতি লাভ করে।