স্টেনোগ্রাফারের অভাবে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

পঞ্চগড়ে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্টেনোগ্রাফারের অভাবে বিচারপ্রার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। রায় ঘোষণার পর দীর্ঘদিন পার হলেও ১৪৬টি মামলার রায়ের জাবেদা নকল (সার্টিফায়েড কপি) না পেয়ে বিচারপ্রার্থীরা উচ্চ আদালতে যেতে পারছেন না।
এ বিষয়টি জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জেলা ও দায়রা জজকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ এম এ নূর এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।
বিচারপ্রার্থী ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যুগ্ম ও জেলা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. রফিকুল ইসলাম শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এর পর থেকে স্টেনোগ্রাফার নিয়োগের প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। প্রেষণেও কোনো স্টেনোগ্রাফার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ ওই পদটি শূন্য থাকায় বিচারকাজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। স্টেনোগ্রাফার না থাকায় এবং আদালতের কম্পিউটারটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকার কারণে মামলার রায়ের নথি সেরেস্তা শাখায় পৌঁছায় না। অধিকাংশ মামলার ডিক্রিও লেখা হয় না। ফলে রায়ের জাবেদা নকল না পেয়ে বিচারপ্রার্থীরা আপিলের জন্য উচ্চ আদালতে যেতে পারছেন না।
বিচারপ্রার্থী লুৎফুল কবীর বলেন, নয় লাখ টাকা জমা দিয়ে তিন বছর আগে তিনি অগ্র ক্রয় মামলা করেন। ছয়-সাত মাস আগে মামলার রায় হয়েছে। কিন্তু জবেদা নকল না পাওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে যেতে পারছেন না। এখন টাকাও তিনি তুলতে পারছেন না।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আফজাল হোসেন বলেন, যুগ্ম ও জেলা জজ মো. মামুন-অর-রশিদ দক্ষতার সঙ্গে বিচারকাজ সম্পন্ন করলেও স্টেনোগ্রাফারের জন্য আদালতে কিছুটা সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। আইনজীবী ইসমাইল হোসেন সরকার বলেন, একেকটি দেওয়ানি মামলার আরজি আর জবাব ১৫০ থেকে ২০০ পৃষ্ঠায় নথিভুক্ত থাকে। এসব পড়ে রায় নির্ধারণ করার পর তা লিখতে হয়। এ কাজ একজন স্টেনোগ্রাফার ছাড়া বিচারকের পক্ষে করা অসম্ভব। তা ছাড়া আদালতের কম্পিউটারটিও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ১৪৬টি মামলার বিচারপ্রার্থীদের উচ্চ আদালতে যেতে না পারার বিষয়টি জেলা ও দায়রা জজকে অবহিত করা হয়।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ এম এ নূর মুখ্য বিচাররিক হাকিম আবুল হাসনাত মো. আবদুল ওয়াদুদকে প্রধান করে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে তিনি প্রতিবেদন দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ এম এ নূর যুগ্ম ও জেলা জজ আদালতের বিচারক মামুন-অর-রশিদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।