এবার ঈদযাত্রায় পথে যানজট কম এমনটা শুনে মনে বেশ স্বস্তি নিয়েই ঢাকা থেকে গতকাল শনিবার রাত ১১টায় ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা দেন ইমন। ঢাকার মাজার রোড থেকে সময়মতোই বাস ছেড়েছিল তাঁর। সচরাচর এই গন্তব্যে যেতে ঢাকা থেকে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা সময় লাগে।
কিন্তু ১২ ঘণ্টা পার হওয়ার পরেও ইমন আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে যানজটে আটকে ছিলেন। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর পলাশবাড়ীতে পৌঁছানোর কথা। সেখান থেকে ঠাকুরগাঁও পৌঁছাতে ইমনের আরও চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যেতে পারে। অর্থাৎ ১০ ঘণ্টার বদলে ইমন ঠাকুরগাঁও পৌঁছাবেন প্রায় ১৬ ঘণ্টায়।
পলাশবাড়ীতে যানজটে বাসে আটকে থাকার সময় ইমন বলেন, পথে সাভার-নবীনগর-চন্দ্রা রুটে পুরোটাই থেমে থেমে যানজট ছিল। এটুকু পথ পাড়ি দিতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লেগেছে। টাঙ্গাইল হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু অবধি থেমে থেমে চলেছে গাড়ি। সেতুর টোল প্লাজা ঘিরেও ছিল গাড়ির জট। সেতু পেরিয়ে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে।
তবে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এ জন্য গাড়ির গতি শ্লথ হয়ে এসেছে। বিভিন্ন বাজার ঘিরে তৈরি হয়েছে জটলা, যা যানজটের অন্যতম কারণ। গাড়ি খুবই ধীর গতিতে এগোচ্ছে।
ইমনের যাত্রার তিন ঘণ্টা আগে গতকাল শনিবার রাত ৮টায় বাস ছাড়ার কথা ছিল আল আমিন সজীবের। দুই ঘণ্টা দেরিতে বাস ছাড়ে তাঁর। আল আমিন ঢাকা থেকে পাটগ্রামে যাবেন। বাসে ওঠার পর গাবতলী ও সাভারে যানজটে পড়েন বলে জানান সজীব। তিনি বলেন, যমুনা সেতুর ওখানে টোল দেওয়ার জন্য সময় বেশি লেগেছে। সেখানে যানবাহনের জট তৈরি হয়। সিরাজগঞ্জেও কিছুটা যানজটে পড়েন আল আমিন। তবে বগুড়ায় ঢোকার পর গাড়ির গতি কমতে শুরু করে। বগুড়া পার হয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ অংশে যাওয়ার পর গাড়ি একেবারে আটকে যায়। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সেখানে প্রচণ্ড যানজট ছিল বলে জানান তিনি। আল আমিন বলেন, ১০ মিনিট পরপর গাড়ি ১০ মিটার আগাচ্ছে। আবার থেমে থাকছে।
আল আমিন আরও বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে বগুড়া যেতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ১৫ ঘণ্টায় তিনি বগুড়া পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, যানজটের কারণে বেশির ভাগ যাত্রী সাহরির সুযোগ পাননি। সাহরির সময় শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে রাস্তার ধারে খোলা দোকানে বাসটি যাত্রাবিরতি দেয়। সেখানে তাড়াহুড়ো করে কেউ কেক-বিস্কুট, কেউ পানি খেয়ে নেয়।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে যাবেন কবির হোসেন। চাকরি করেন মুন্সিগঞ্জে। তিনি বলেন, 'অনেক দিন পর বাড়িতে যাচ্ছি। বাড়ি যাওয়ার আগে কাউন্টারে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেই অবস্থা কাহিল। একটা কেক আর পানি খেয়ে রোজা আছি। এত যানজট দেখে ইফতারের আগে বাড়িতে পৌঁছাতে পারব কিনা সেটা নিয়েই চিন্তায় পড়েছি।