কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ৭১ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত নয়টা থেকে আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়।
উখিয়ার সীমান্তে দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাত থেকে আজ সোমবার বিকেল পর্যন্ত উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন ৩ শিশু, ১৩ নারী, ১৭ পুরুষসহ ৩৩ জন রোহিঙ্গা। তাদের বাধা দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত ১ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল পর্যন্ত ১০৫ জনকে রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাত থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত নাফ নদী ও টেকনাফের উনছিপ্রু, ঝিমংখালী, হ্নীলা, হোয়াইক্যংসহ চারটি সীমান্ত এলাকার প্রতিটি পয়েন্ট দিয়ে পাঁচ-ছয়টি নৌকায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় (প্রতিটিতে ১০-১২ জন) রোহিঙ্গাদের প্রতিহত করা হয়েছে। এর মধ্যে হোয়াইক্যং সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৩৮ জনকে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিজিবি সদস্যদের বাধার মুখে অনুপ্রবেশ করতে না পেয়ে তারা বাধ্য হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যায়।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সহস্রাধিক বাড়িঘর ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে আজ সোমবার এ দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। মিয়ানমারের বাংলাদেশ-সংলগ্ন সীমান্তে প্রচুর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশহীন এই মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বড় অংশের বসবাস এই সীমান্তসংলগ্ন এলাকাতেই।
জাতিসংঘ বলেছে, চলমান সহিংসতায় ৩০ হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরুর করে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয় চার শতাধিক মানুষকে। তবে নিরপেক্ষ বিভিন্ন সূত্র বলছে, নিহত এবং গ্রেপ্তারের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক শ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।