৯৯৯–এ ফোন, তিন বছরের শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আটক বাবাকে দেখতে মায়ের সঙ্গে আসে তিন বছরের শিশুটি। রাত হয়ে যাওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে মা কারাগারের পাশে একটি মাজারে ঘুমিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে শিশুটি মায়ের কাছ থেকে এক কিলোমিটার দূরে আরেক মাজারে চলে যায়। ঘুম ভাঙার পর মা শিশুকে না পেয়ে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করেন। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে মায়ের কাছে তুলে দেয় নগরের কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।
শিশুটির মা ছেনোয়ারা আক্তার। বাবা একটি মামলায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। টেকনাফ উপজেলায় তাঁদের বাড়ি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে মেয়েকে নিয়ে ছেনোয়ারা আক্তার গত মঙ্গলবার টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামে আসেন। সেখানে কোনো আত্মীয়স্বজন না থাকায় মেয়েকে নিয়ে কারাগারের পাশে আমানত শাহ মাজারে যান। মা ঘুমিয়ে পড়লে শিশুটি খেলতে খেলতে মাজার থেকে বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে যায়। ঘুম ভাঙার পর রাতে মা মেয়েকে না পেয়ে ৯৯৯–এ কল দেন। সেখান থেকে ঘটনাটি জানানো হয় কোতোয়ালি থানাকে।
ওসি জাহিদুল কবির বলেন, খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াসিন দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। শাহ আমানত মাজারের আশপাশের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। পাশাপাশি রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও হাসপাতালে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। আমানত শাহ মাজারের সিসিটিভির ফুটেজে রাত পৌনে দুইটার দিকে এক নারীর পেছন পেছন হেঁটে শিশুটিকে মাজার থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়। ইতিমধ্যে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ছেনোয়ারাকে দিয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করানো হয়।
জাহিদুল কবির আরও বলেন, মেয়েকে না পেয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা না করেই বুধবার ছেনোয়ারা টেকনাফ চলে যান। একপর্যায়ে বুধবার বিকেলে পুলিশের কাছে খবর আসে শিশুটি হারিয়ে যাওয়ার স্থান থেকে এক কিলোমিটার দূরে বদর শাহ মাজারে একটি শিশুকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। খবর দেওয়া হয় ছেনোয়ারাকে। মায়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয় শিশুটি তাঁর। আজ সকালে তিনি থানায় এলে তাঁর কোলে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেয়ে ছেনোয়ারার চোখে পানি চলে আসে। উদ্ধার করে দেওয়া পুলিশ সদস্যদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ছেনোয়ারা প্রথম আলোকে বলেন, তিন বছর আগেও তাঁর আরেক মেয়ে টেকনাফ থেকে হারিয়ে গেছে। তার খোঁজ এখনো পাননি। এই মেয়েকে না পেলে কাকে নিয়ে তিনি বাঁচতেন, চিন্তা করতে পারেন না।