পাথরঘাটা-কাঁঠালিয়া রাজাপুর সড়ক

বেহাল সড়ক—২৫

দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

সংস্কারের অভাবে বরগুনা ও ঝালকাঠি জেলার পাথরঘাটা-বামনা-কাঁঠালিয়া-রাজাপুর আঞ্চলিক সড়কের প্রায় ২৮ কিলোমিটার অংশে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে ভেতরের ইট। আর সামান্য বৃষ্টি হলে সড়ক পানিতে ভরে যায়।

সওজের বরগুনা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনার পাথরঘাটা থেকে বামনা উপজেলা হয়ে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা পর্যন্ত এ আঞ্চলিক সড়কটির দৈর্ঘ্য ৭৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বরগুনা অংশে রয়েছে ৪৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার এবং ঝালকাঠি অংশের আমুয়া ফেরিঘাট থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে খারাপ।

সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার দেখা যায়, পাথরঘাটা-কাকচিঁড়া সেতুর দক্ষিণ পাড় থেকে ঘুটাবাছা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশের পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এরপর দুই কিলোমিটার অংশ মোটামুটি ভালো থাকলেও সোনালী বাজার থেকে বটতলা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার, কুপদোন বাজার থেকে কাকচিঁড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার ও ঝালকাঠির আমুয়া বন্দর থেকে কাঁঠালিয়া উপজেলা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কও খানাখন্দে ভর্তি।

আমুয়া এলাকার মাহেন্দ্রচালক মনির হোসেন বলেন, ‘আমাদের গাড়ির চাকা ছোট। গর্তের কারণে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কিন্তু কী আর করব, জীবিকার তাগিদে তবু চালাতে হয়।’

বাসচালক রেজাউল কবির বলেন, আমুয়া থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত সড়কে প্রতিদিন কোনো না কোনো যাত্রীবাহী বাস সড়কে আটকা পড়ে। এতে যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদেরও দুর্ভোগের সীমা থাকে না।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কাকচিঁড়া বাজার এলাকায়। সড়কের অনেক জায়গায় পানি। বাজারের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে বামনার দিকে ১ কিলোমিটার সড়কে গোটা সড়কই গর্তে পরিণত হয়েছে। এই অংশে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টকর। বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা থেকে বামনা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানের সুরকি উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

বাসচালক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আন্তজেলা বাস ছাড়াও পাথরঘাটা-ঢাকা, পাথরঘাটা-চট্টগ্রাম, কাকচিঁড়া-খুলনা-যশোর, বরগুনা-কাকচিঁড়া-যশোর-বেনাপোল পথের অন্তত ৪০টি বাস চলাচল করে। এ ছাড়া রিকশা, ইজিবাইক ও ভ্যানসহ অন্য যানবাহনও চলাচল করে। পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন অনেক ট্রাক মাছ নিয়ে দেশের নানা স্থানে যায়।

ঢাকা-পাথরঘাটা পথে চলাচলকারী একটি বাসের চালক জাকির হোসেন বলেন, ঝুঁকি নিয়ে এই পথে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। প্রায়ই চাকা গর্তে দেবে যায়। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। সড়কটি সংস্কার না হলে কিছুদিন পর আর এ পথে গাড়ি চালানো সম্ভব হবে না।

সড়ক ও জনপথ বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত ছোটখাটো সংস্কারকাজ করা হলেও বর্তমানে সড়কটির অবস্থা নাজুক। তাঁরা বরাদ্দ চেয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

সওজের ঝালকাঠি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ শাহেদ গত রোববার বলেন, আমুয়া ফেরিঘাট থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ জন্য দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে।