পরিবারের অভিযোগ, তুলে নেওয়া হয় দুই সপ্তাহ আগে

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার খলিসাখালী গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জেএমবি সদস্য। তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কাকারবিল গ্রামের আকাশ মোল্লা, পিরোজপুরের নাজিরপুরের রঘুনাথপুর গ্রামের কবিরুল ইসলাম, পিরোজপুর পৌরসভার দক্ষিণ শেখপাড়া মহল্লার মো. হাবিবুল্লাহ এবং মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর সোনাখালী গ্রামের মিজানুর রহমান।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার রাত দেড়টার দিকে খলিসাখালী গ্রামের সাফায়েত শেখের বাগানবাড়িতে পরিত্যক্ত একটি ঘরে জেএমবির ১২-১৩ জন সদস্য নাশকতার পরিকল্পনার জন্য বৈঠকে বসেন। গোয়েন্দা পুলিশ ও কচুয়া থানা-পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জেএমবির সদস্যরা কয়েকটি হাতবোমা ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ চার জেএমবির সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। জেএমবি সদস্যদের ছোড়া হাতবোমায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের কাছ থেকে একটি রিভলবার, দুটি গুলি, পাঁচটি হাতবোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও একটি কম্পিউটার জব্দ করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবির সদস্যদের গতকাল মঙ্গলবার আদালতে হাজিরের পর তাঁরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জবানবন্দির ব্যাপারে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত বলা হবে।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া কবিরুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ ও মিজানুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা দাবি করেন, পুলিশ পরিচয়ে তাঁদের ১৩ অক্টোবর তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া কচুয়া উপজেলার কাকারবিল গ্রামে আকাশের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নাজিরপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কবিরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে পিরোজপুর শহরের সিও অফিস মহল্লায় বসবাস করেন। তিনি স্থানীয় এক আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। কবিরুলের বাবা লোকমান ফরাজী বলেন, তাঁর ছেলে আহলে হাদিস সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৩ অক্টোবর রাত তিনটার দিকে পুলিশ কবিরুলকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ নেয়নি।

হাবিবুল্লাহর বাবা আবদুল হাই শেখ বলেন, তাঁর ছেলে পিরোজপুর শহরের কিয়াম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার কম্পিউটার মেরামতের একটি দোকান রয়েছে। ১৩ অক্টোবর রাতে পৌরসভার রাজারহাট এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।

মিজানুর রহমানের বাবা আলম হাওলাদার যশোরের নওপাড়ায় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী। তিনি বলেন, মিজানুর শহরের এক দোকানে চাকরি করতেন। কয়েক দিন আগে পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের পরিবারের বক্তব্য সঠিক নয়।