দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা পাবে আবাসন-সুবিধা

তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম এলাকায় মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারে শিক্ষার্থীদের আবাসন–সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ১৩টি নতুন আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে। এসব বিদ্যালয়ে থাকবে একটি করে ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস। এর পাশাপাশি ১৯টি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫৫টি ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মিত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দরিদ্র ও দুর্গম এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের জন্য ‘তিন পার্বত্য জেলায় নতুন আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন ও বিদ্যমান বিদ্যালয়ে আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে অনগ্রসর বিবেচনায় এ উদ্যোগে অগ্রাধিকারে রাখা হয়েছে বান্দরবানকে। প্রস্তাবিত ১৩টি নতুন আবাসিক বিদ্যালয়ের স্থান ও ১৯টি সরকারি বিদ্যালয় ইতিমধ্যে মাউশির কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। ১০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বান্দরবানের সহকারী প্রকৌশলী আলেখ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ১৩টি নতুন আবাসিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বান্দরবানে ১০টি, রাঙামাটিতে দুটি ও খাগড়াছড়িতে একটি হবে। এ ছাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে বান্দরবানের সাতটি, রাঙামাটির সাতটি ও খাগড়াছড়ির পাঁচটি বিদ্যালয়ে একটি করে ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশিতে পাঠানো নতুন আবাসিক বিদ্যালয়ের প্রস্তাবে বান্দরবানে সদর উপজেলায় তিনটি (হ্লাপাইমুখ, টঙ্কাবতী, ভাগ্যকুল), লামায় একটি (টিটি অ্যান্ড ডিসি এলাকা), আলীকদমের নোয়াপাড়ায় একটি, নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুনধুমে একটি, রুমার রেমাক্রি প্রাংসায় একটি, রোয়াংছড়িতে দুটি (বেতছড়া ও কচ্ছপতলী) ও থানচির তিন্দুতে একটি বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকি তিনটির মধ্যে রাঙামাটি জেলার কাউখালী ও বিলাইছড়িতে দুটি বিদ্যালয় নির্মিত হবে। খাগড়াছড়ির একটি নতুন আবাসিক বিদ্যালয় কোথায় হবে, এখনো স্থান নির্ধারিত হয়নি।

মাউশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ২০০ (৩৯টি) ও ১৫০ (৪২টি) আসনের মোট ৮১টি ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হবে। ১৪ হাজার ১০০ ছাত্রছাত্রী আবাসিক সুবিধায় পড়াশোনার সুযোগ পাবে। এ জন্য ৬৭১টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।             মাউশি অধিদপ্তরের উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ ওসমান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে শিগগিরই পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদিত হবে। দুর্গম এলাকার জন্য আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে পার্বত্যবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তাদের দাবি পূরণ হবে এবং পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষায় আমূল পরিবর্তন আসবে।