র‍্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৩

বাগেরহাটে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কাতলার খাল এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-৮) সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। র‍্যাবের দাবি, নিহত ব্যক্তিরা সুন্দরবনের দস্যু সাগর-সৈকত বাহিনীর সদস্য। তবে পরিবারের দাবি, দুজন অন্তত দেড় মাস আগে থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
নিহত তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন মোল্লা (২৭) ও হাড়িটানা গ্রামের সোহেল মিয়া (২৫)।
র‍্যাব-৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবিরের ভাষ্য অনুযায়ী, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কাতলার খাল এলাকায় জলদস্যু সাগর-সৈকত বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন সদস্য ওই এলাকায় অবস্থান করছে, এ সংবাদ পেয়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। গতকাল সকাল সাতটা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে দস্যুদের সঙ্গে র‍্যাব সদস্যদের গুলিবিনিময় হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন।
তবে সাদ্দাম মোল্লার বাবা সোনা মোল্লা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেড় মাস ধরে সাদ্দামের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। শুনেছি ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের শ্রীপুর থেকে পাথরঘাটার দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামের নাসির বিশ্বাস আমার ছেলেকে র‍্যাবে ধরিয়ে দেয়। এখন শুনি গুলিতে মারা গেছে সে।’ ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে র‍্যাব-৮-এর একদল সদস্য দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামে অভিযান চালিয়ে চারটি হরিণের চামড়াসহ নাসিরকে আটক করেন। বর্তমানে তিনি বরগুনা কারাগারে আছেন।
অন্যদিকে নিহত সোহেলের বাবা গোলাম মোস্তফা গতকাল বিকেলে বলেন, ‘আমার ছেলে চট্টগ্রামে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করত। সেখান থেকে ২৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাইনি।’
র‍্যাব-৮-এর দাবি, বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে নয়টি একনলা বন্দুক, দুটি এলজি, একটি পিস্তল, চারটি গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন, বন্দুকের ৫৫টি গুলি, ১২ ভোল্টের ব্যাটারিসহ একটি সোলার প্যানেল, ‘কচিখালী ফিশ’ নামে বেশ কিছু দস্যু কার্ড (টোকেন) ও নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
তিনজনের লাশ ও উদ্ধার করা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গতকাল দুপুরে পাথরঘাটার চরদুয়ানি এলাকায় আসে র‍্যাব। এ সময় র‍্যাব-৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির প্রথম আলোকে বলেন, লাশ তিনটি বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শরণখোলা থানার ওসি রেজাউল করিম গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বলেন, ‘লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তরের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তৃতীয় ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’