বিমার টাকা পেতে মেয়েকে হত্যা, বাবার মৃত্যুদণ্ড

পিরোজপুরে বিমার টাকা পাওয়ার লোভে জেসমিন আক্তার (৮) নামের এক শিশুকে হত্যার দায়ে তার বাবা মহারাজ হাওলাদারকে (৪৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিল্লুর রহমান এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মহারাজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।

সাজাপ্রাপ্ত মহারাজ মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট শিংগা গ্রামের আলী হোসেন হাওলাদারের ছেলে। তিনি ঘটনার পর থেকেই পলাতক।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহারাজ তাঁর শিশুসন্তান জেসমিন আক্তারের নামে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি জীবনবিমা করেন। ২০০৫ সালের ৪ মে রাতে জেসমিনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ বাড়ির পাশের একটি খালে ফেলে দেন মহারাজ। এরপর তিনি পানিতে ডুবে জেসমিন মারা গেছে বলে এলাকাবাসীকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শ্বাসরোধে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মঠবাড়িয়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মহারাজের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০০৬ সালের ১৪ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হারেজ তালুকদার মহারাজের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। বিমার টাকা পাওয়ার জন্য মহারাজ তাঁর মেয়েকে হত্যা করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক আজ মহারাজকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। জেসমিনের মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাঁর মায়ের সঙ্গে মহারাজের বিচ্ছেদ ঘটে।

গৃহবধূ হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন
একই আদালতের বিচারক আজ আকলিমা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামী সেলিম ব্যাপারীকে (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সেলিম ব্যাপারী একই উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলী ব্যাপারীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় সেলিম ব্যাপারী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৯ সালের ৮ জুলাই ভোরে দাম্পত্য কলহের জের ধরে সেলিম ব্যাপারী তাঁর স্ত্রী আকলিমাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি আকলিমাকে গলা টিপে হত্যা করেন। এ ঘটনায় আকলিমার ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।