'এক সপ্তাহ আগে ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় পুলিশ'

‘গ্রেপ্তার দেখানোর এক সপ্তাহ আগে আমার ছেলেকে পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকের একদল লোক বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার খোঁজ পাচ্ছিলাম না। গত শনিবার সংবাদমাধ্যমে ছেলের নাম আর ছবি দেখে জানতে পারলাম, তাকে গাজীপুর ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউলতিয়া মধ্যপাড়ার আবুল কাশেম গতকাল রোববার প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা সন্দেহে গাজীপুরে গ্রেপ্তার চার ব্যক্তির একজন খায়রুল ইসলামের বাবা।
নিজ কার্যালয়ে গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, জয়দেবপুর থানার নান্দুয়াইন এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কাছে জঙ্গলের ভেতরে সুফিয়া কটেজের পরিত্যক্ত একটি একতলা ভবনে গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালান জেলা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক গ্রুপের সদস্যরা। অভিযানে চার হুজি নেতাকে গ্রেপ্তার এবং ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, বোমা ও বিভিন্ন জিহাদি বই উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খাইরুল ইসলাম (২৬), টাঙ্গাইল সদরের বিশ্বাস বেতকা আটপুকুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে আমিনুল হক (৪৯), একই জেলার গোপালপুর থানার খামারপাড়া গ্রামের মৃত মনিরুল ইসলামের ছেলে শহীদ উল্লাহ (৪৩) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার সৈয়দপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম খানের ছেলে গোলাম কিবরিয়া খান (২৫)। তাঁদের মধ্যে শহীদ উল্লাহ আরাকান-ফেরত জঙ্গি।
খায়রুলের বাবা আবুল কাশেম বলেন, ‘২১ অক্টোবর রাত একটার দিকে ডিবি পুলিশের লোকজন বাড়িতে ঢুকে খাইরুলকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে যায়। অথচ শুক্রবার পুলিশ বলল, নান্দুয়াইনের সুফিয়া কটেজের পরিত্যক্ত একটি ভবন থেকে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
খায়রুলের পরিবারের অভিযোগের ব্যাপারে গাজীপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুফিয়া কটেজ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ওই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছেলেকে বাঁচাতে তাঁরা মিথ্যা বলছেন।’
গ্রেপ্তার খাইরুলসহ চারজনকে গত শনিবার গাজীপুর আদালতে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাঁদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।