নাসিরনগরে মন্দিরে হামলার ঘটনায় ২ মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় ভাঙচুর করা ১৫টি মন্দিরের মধ্যে দুটি মন্দিরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আজ সোমবার নাসিরনগর থানায় মামলা দুটি করা হয়। এর মধ্যে এসব মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রোববার তাঁদের আটক করা হয়।
উপজেলা সদরের দত্তপাড়ার দত্তবাড়ি দুর্গামন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় কাজল জ্যোতি দত্ত ও সদরের মহাকালপাড়া গৌরমন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’আত, বাংলাদেশি ইসলামি ফ্রন্ট ও গাউছিয়া যুব সংগঠন এসব হামলার সঙ্গে জড়িত।
গতকাল দুপুরে সদর থানার আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ১৫টি মন্দির ও শতাধিক বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে হবিগঞ্জের মাধবপুরেও দুটি মন্দির ও কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর একটি পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এ অভিযোগে নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসুরাজ দাস (৩০) নামের এক যুবককে গত শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর দাবি, তাঁর ফেসবুক পেজে ঢুকে অন্য কেউ ওই পোস্ট দিয়েছে।
ধর্মীয় অবমাননার প্রতিবাদে গতকাল সকালে স্থানীয় ডিগ্রি কলেজ মোড়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’আতের উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক রিয়াজুল করিমের নেতৃত্বে এবং স্থানীয় খেলার মাঠে খাঁটি আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’আতের সভাপতি মো. মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে সমাবেশ হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, ওই দুই সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকজনই সমাবেশ শেষে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন।
আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) রাজন কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় এখন পরিবেশ শান্ত আছে। বেলা তিনটায় উপজেলা পরিষদে সম্প্রতি সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান থাকবেন।
নাসিরনগর থানার পুলিশ জানায়, গতকাল হামলার সময় বিভিন্ন মন্দিরের সামনে থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। পরে আরও দুজনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের হাত ও শরীরে ক্ষত দেখা গেছে। হামলা চালাতে গিয়ে এ ক্ষত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।