সাংসদ বদির তিন বছরের কারাদণ্ড

সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে কক্সবাজার-৪ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু আহমদ জমাদার আজ বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বদি।

গত ১৯ অক্টোবর এই মামলায় যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর আদালত রায় ঘোষণার তারিখ ২ নভেম্বর ধার্য করেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে সাংসদ বদির বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বছরের ৭ মে দুদক এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

মামলার রায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে বদিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁকে সাজা দিয়েছেন।

রায়ে আদালত বলেন, আসামি সম্পদের তথ্য কেন গোপন করেছেন, তা তিনিই বলতে পারেন।

রায়ের পর দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন বলেন, সাংসদ বদির বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাঁকে জেল-জরিমানার দণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বদির আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকা বলেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, রায় ঘোষণার ধার্য দিনে সকাল ১০টার পর আদালতের এজলাসকক্ষে আসেন বদি। এরপর তাঁকে ঘিরে মোবাইলে ছবি তোলা শুরু হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) প্রথম আলোকে বলেন, এজলাসকক্ষে ছবি তোলার ব্যাপারে বারণ করা হলেও কেউ তা শোনেননি।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর অফিস সহায়ক শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এজলাসকক্ষের ভেতরে ছবি না তোলার জন্য তিনি নিজেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষেধ করেছেন।

এজলাসকক্ষে ছবি তোলার কথা স্বীকার করে বদির আইনজীবী মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি (বদি) একজন নেতা।

২০১৪ সালের ২১ আগস্ট করা এই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আবদুর রহমান বদি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকা মূল্যমানের সম্পদের তথ্য গোপন করে বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য কম মূল্যে সম্পদ কেনা দেখিয়ে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৩ হাজার ৩৭৫ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি দেখানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সালে আবদুর রহমান বদির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকার। ২০১৩ সালে তিনি যে আয়কর বিবরণী দাখিল করেন, এতে দেখা যায়, তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি ৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। দুদক সম্পদের বিবরণী চেয়ে বদিকে নোটিশ দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: