সংস্কার হয় না চার বছর

>
ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়ক বেহাল। ছবিটি গত সোমবার ত্রিশাল উপজেলার তোড়াবাজার এলাকা থেকে তুলেছেন জগলুল
ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়ক বেহাল। ছবিটি গত সোমবার ত্রিশাল উপজেলার তোড়াবাজার এলাকা থেকে তুলেছেন জগলুল
দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়ক ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর বেশির ভাগ অংশে পিচের কোনো চিহ্ন নেই। চার বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এ পথের যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত সোমবার ময়মনসিংহ থেকে গফরগাঁও পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, কোথাও কোথাও এক থেকে দুই ফুট গভীর গর্ত। কোনো কোনো গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। ধীরগতিতে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যান। এ ছাড়া বালুবোঝাই ট্রাক চলাচল করছে। সড়কের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শেষ মোড়, সুতিয়াখালী, ভাবখালী, কালিরবাজার, বালিপাড়া ও ধলাবাজার এলাকার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ময়মনসিংহ থেকে গফরগাঁও পর্যন্ত সড়কটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। ত্রিশাল উপজেলার কালিরবাজার ও বালিপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে নদ থেকে বালু উত্তোলন করে সড়কের পাশে রাখা হয়। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কমপক্ষে চার বছর ধরে ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়কের অবস্থা খারাপ। দিন দিন সড়কে গর্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এ পথে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন বেশ কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটি দিয়ে গফরগাঁও থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যেতে স্বাভাবিকভাবে এক ঘণ্টা সময় লাগত। কিন্তু চার বছর ধরে কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা লাগছে। জরুরি কাজে ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া ও কালিরবাজার এলাকার লোকজন ত্রিশাল সদর হয়ে ময়মনসিংহে যাতায়াত করেন। গফরগাঁওয়ের বাসিন্দারা সাধারণত ট্রেনে ময়মনসিংহে যাতায়াত করেন। তবে সময়মতো ট্রেন ধরতে না পারলে ঝুঁকি নিয়ে এ পথে ময়মনসিংহ যান।
গফরগাঁও পৌর শহরের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘পিটিআই প্রশিক্ষণের জন্য সাত মাস ধরে প্রতিদিন ময়মনসিংহ শহরে যাই। ট্রেন ধরতে না পারলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে হয়। রাস্তা এত খারাপ যে প্রতি মুহূর্তে দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হয়।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মাসুদ রানা বলেন, ‘মহাসড়কে অটোরিকশা নিষিদ্ধ। তাই বাধ্য হয়েই এই সড়কে অটো চালাই। রাতে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। যাত্রীরাও অনেক সময় ভাঙা সড়কের কারণে অসুস্থ বোধ করেন।’
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাসেদ খান বলেন, সড়কটি চার বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কার হয় না। সড়কটি সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। তবে খুব বেশি খারাপ কিছু এলাকায় কয়েক মাসের মধ্যে সংস্কার করা হবে। নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বালুভর্তি ট্রাক চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না।’