১২ কিলোমিটারে বাস চলাচল বন্ধ ছয় মাস

>

হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরীপুর সড়কের ​ি​বভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। ছবিটি গত শনিবার হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার থেকে তোলা l প্রথম আলো
হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরীপুর সড়কের ​ি​বভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। ছবিটি গত শনিবার হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার থেকে তোলা l প্রথম আলো

বেহাল সড়ক৫৬

দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ১৮ কিলোমিটার অংশ খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে ১২ কিলোমিটারে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ হালকা যান।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ হাজীগঞ্জের উপবিভাগীয়প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে কুমিল্লার গৌরীপুর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে চাঁদপুর অংশে পড়েছে ৩২ কিলোমিটার, যার ১৪ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। অবশিষ্ট ১৮ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজার থেকে কাঁঠালীবাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার এবং কচুয়ার পূর্ব কালচোঁ গ্রাম থেকে বায়েকের মোড় পর্যন্ত ১৪কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা। এ ১৮ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। হাজীগঞ্জ থেকে কচুয়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল থাকায় মাস ছয়েক ধরে এপথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গত সপ্তাহে কচুয়া বাজার থেকে সাচার বাজারে যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় উঠলে চালক ইউসুফ আলী প্রধান সড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প গ্রামের রাস্তা দিয়ে যান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কটির ওই অংশে বড় বড় গর্ত থাকায় অটোরিকশা চালানো যায় না। তাই এই ঘুরপথ ধরেছেন।

কচুয়া উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন বলেন, হাজীগঞ্জ বাজার থেকে কচুয়ায় যাওয়ার জন্য এটি সহজ পথ। চাকরির সুবাদে সড়কটি ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু ভাঙাচোরা এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

মাইক্রোবাসচালক মহিউদ্দিন বলেন, ‘সড়কটি যখন ভালো ছিল, তখন আমরা দুই ঘণ্টায় হাজীগঞ্জ বাজার থেকে ঢাকা যেতাম। কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় কোনো মাইক্রোবাসচালক এখন আর এ সড়ক ব্যবহার করেন না। হাজীগঞ্জ বাজার থেকে কুমিল্লা হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন।’

হাজীগঞ্জ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, হাজীগঞ্জ থেকে কুমিল্লা হয়ে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। অন্যদিকে হাজীগঞ্জ থেকে কচুয়া হয়ে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

ঢাকা-রামগঞ্জগামী একটি পরিবহন কোম্পানীর টিকিট কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মজিবুল হক বলেন, ‘ছয় মাস ধরে ওই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের অনেক স্থানে বড় বড় গর্ত থাকায় বাস আটকে যায়। আর সড়ক খারাপ হওয়ায় যাত্রীরাও এ সড়কে যাতায়াত করতে চান না। সে জন্য আমাদের বাসগুলো এখন কুমিল্লা হয়ে ঢাকায় যায়।’

সওজ হাজীগঞ্জ কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রায়ই ইট, সুরকি ও বালু ফেলে সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মেরামত টেকসই হচ্ছে না।

সওজ বিভাগের জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন, ইতিমধ্যে সড়কটির ১৪ কিলোমিটার সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১৮ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দরকার। বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।