তিন যুবলীগ নেতা-কর্মী হত্যার চার দিন পর মামলা

যুবলীগের তিন নেতা-কর্মী হত্যার চার দিন পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর সদর থানায় মামলা হয়েছে। নিহত রেদোয়ান সাব্বিরের মা মোছা. রুখসানা বেগম (৫৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলাটি করেন।

নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রেদোয়ান সাব্বিরের মা রুখসানা বেগমের স্বাক্ষরিত একটি এজাহার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এজাহারের বরাত দিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়িক কাজে মো. সাব্বির তাঁর বন্ধু মো. আবদুল্লাহ ও মো. সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের তোকিয়া বাজারে উদ্দেশে গত শনিবার রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। সেখানে মান্নান মিয়ার দোকানে চা পান করার সময় আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি সাদা ও একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে আনুমানিক ১৫-১৬ জন সাদাপোশাক পরা অজ্ঞাত সশস্ত্র সন্ত্রাসী র‍্যাব পরিচয় দিয়ে তাঁদের ঘিরে ধরে। তারা লাঠি দিয়া তাঁদের মারপিট করতে করতে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে রাজশাহীর দিকে চলে যায়। এ সময় বাজারের নৈশপ্রহরী আবদুল জব্বার ও ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আবদুল লতিফসহ আরও কয়েকজন ঘটনাটি দেখেন। এ ঘটনা লোকমুখে শুনে এজাহারকারী পরদিন রোববার (৪ ডিসেম্বর) সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এজাহারকারী থানার মাধ্যমে জানতে পারেন, তাঁর ছেলে ও ছেলের দুই বন্ধুর গুলিবিদ্ধ মরদেহ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কলাপাড়া এলাকার রাস্তার ধারের একটি আমবাগানে পড়ে আছে। পরে আত্মীয়স্বজনেরা দিনাজপুরে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। পরে লাশগুলো দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নাটোরে নিয়ে আসা হয় এবং জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

এজাহারকারী এজাহারের শেষে দফায় উল্লেখ করেছেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস যে তাঁর ছেলে সাব্বিরসহ তাঁর অপর দুই বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। এ ঘটনাটিকে র‍্যাব ও পুলিশ প্রচলিত ক্রসফায়ার বলেও জানায়নি। এতে এজাহারকারীর প্রতীয়মান হয়েছে যে প্রশিক্ষিত শক্তিশালী বাহিনী পরিকল্পিতভাবে নিজে অথবা প্ররোচিত হয়ে নির্মম ও নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
ঘটনার চার দিন পর মামলা দায়েরের ব্যাপারে এজাহারকারী জানান, বহু দূর থেকে লাশ এনে দাফন করতে সময় অতিবাহিত হওয়া বিলম্বের কারণ।

এজাহার পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজই তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে তদন্তকাজ শুরু করব।’

আরও পড়ুন
তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ, সন্দেহ র‍্যাবকে