আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বড় প্রতিবন্ধকতা আইনবহির্ভূত হত্যা: আইনমন্ত্রী

আইনবহির্ভূত হত্যা বা অত্যাচারের ঘটনা সরকারের নজরে আনা হলে শক্ত হাতে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, আইনবহির্ভূত হত্যা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। সরকার যেখানেই এমন ঘটনা দেখবে, সেখানেই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
আজ শনিবার মানবাধিকার দিবস-২০১৬ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথাগুলো বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সিরডাপ আন্তর্জাতিক সেন্টার মিলনায়তনে এর আয়োজন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
আনিসুল হক বলেন, সারা পৃথিবী আয়লান কুর্দির বিষয়ে সোচ্চার হলেও মিয়ানমারে মুসলিম সংখ্যালঘুদের হত্যা নিয়ে কেউ কথা বলছে না। কারণ দেশটির ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে তার উদ্বেগের কথা মিয়ানমারকে জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সবাইকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টি এমন নয়। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের দেশ। সীমিত সম্পদের কারণে যাদের আশ্রয় না দিলে কোনো গতি থাকছে না, তাদের দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সারা বিশ্বে এ বিষয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে কাজ করছে, যাতে তাদের সাহায্যার্থে সবাই এগিয়ে আসে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ ধারা দুটি আলোচনা করতে গিয়ে আমরা মূল আইন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। আইনে কিন্তু বলা আছে, অভিভাবকের সম্মতি ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া ১৮-এর আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। বর্তমান সমাজ ও গ্রামের অবস্থার নিরিখে বিশেষ পরিস্থিতির সমাধানে এই বিশেষ ধারা রাখা হয়েছে।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম। তিনি বলেন, হৃদয়ে মানবতা সৃষ্টি করতে না পারলে সমাজে বা রাষ্ট্রে মানবতার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির এ দেশীয় উপপ্রতিনিধি নিক বেরেসফোর্ড বলেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। পাশাপাশি, জঙ্গিবাদের ভয়, বেকারত্ব, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহসহ আরও নানা সমস্যা রয়েছে। ফলে সমাজে মানবতার প্রতিষ্ঠা সহজ নয়। এ জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন কাজী রিয়াজুল হক বলেন, দেশের মানুষ নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে যথেষ্ট আইন থাকলেও, এর প্রয়োগ না হওয়া এর বড় কারণ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানটি শুরুর আগে মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাবে শেষ হয়।