সাংসদ হয়েছেন তাঁরা সম্পদ বেড়েছে স্ত্রীদের

চট্টগ্রামের চারটি আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের স্ত্রীর সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। নিজেদের সম্পদও বেড়েছে কয়েক গুণ। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্যদের হলফনামা পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া যায়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন: চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের পদপ্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্ত্রীর নামে ২০০৮ সালে ব্যাংক ও হাতে নগদ ছিল মোট চার লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৪৫ টাকা। তার মধ্যে হাতে নগদ ছয় কোটি টাকা। তবে স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ গত পাঁচ বছরে কমেছে। এবার তাঁর স্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার। ২০০৮ সালে এটি ছিল ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা সমপরিমাণের।
তবে মোশাররফ হোসেনের নিজের স্থাবর সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। এবার এক কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ দেখানো হয়। পাঁচ বছর আগে এটি ছিল ৩০ হাজার ৫০০ টাকা। গতবার এই সাংসদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হাতে নগদ ও ব্যাংক জমা দেখানো হয়েছিল ৫০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এবার তা কমে হয়েছে ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
আফছারুল আমীন: চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনের প্রার্থী সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের স্ত্রীর ব্যাংক ও নগদ জমা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। এবার তাঁর মোট ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৫১৪ টাকা নগদ ও ব্যাংকে রয়েছে। গতবার তা ছিল সাত লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ টাকা। তবে তাঁর স্থাবর সম্পদ বাড়েনি। মন্ত্রীর স্থাবর সম্পদও আগের মতো রয়েছে। তবে তাঁর ব্যাংক ও হাতে নগদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। আগে তা ছিল ৩৬ হাজার দুই টাকা।
এম এ লতিফ: চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ এম এ লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে বহুগুণ। এবার হাতে এবং ব্যাংকে মিলে লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা দেখানো হয় দুই কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগে লতিফের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ছিল ৭৬ হাজার ১১৫ টাকা এবং হাতে ছিল ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ তখন ছিল না। এবার স্ত্রীর নামে ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের একটি অকৃষি জমি দেখানো হয়।
লতিফের নগদ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। পাঁচ বছর আগে তা ছিল তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা মাত্র।
সামশুল হক চৌধুরী: চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাংসদ হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে সরকারদলীয় সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর স্ত্রীর স্থাবর অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে। স্ত্রীর নামে এবার নগদ টাকা দেখানো হয় সাত লাখ ৫২ হাজার ৩২৬ টাকা। আর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬২১ টাকা। স্ত্রীর নামে আগে কোনো সম্পদ ছিল না। গতবার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না থাকলেও এবার ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার ভূসম্পদ দেখানো হয়। ব্যবসা খাতে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার এবং বাড়ি ও দোকানভাড়া খাতে সাত লাখ ৩৯ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে। অথচ গতবার এ দুটি খাতে মোট আয় ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
সাংসদ সামশুল হকের হাতে নগদ বেড়েছে ৭৭ গুণ। দশম জাতীয় সংসদের হলফনামায় তাঁর হাতে নগদ দেখানো হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৭ টাকা। আর ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪০ লাখ ১২ হাজার ৩৬৬ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কাছে নগদ এক হাজার ৩৬৯ টাকা ছাড়া ব্যাংকে কোনো টাকা নেই বলে হলফনামায় বলা হয়েছিল।