১০ টাকা বাকি, তাই পরীক্ষাকক্ষ থেকে চারজনকে বিতাড়ন!

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ শেখ সুন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্কাউট ফির ১০ টাকা দিতে না পারায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই ব্যবস্থা নেন।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা করে স্কাউট ফি ধার্য করা হয়। কিন্তু নিজ শেখ সুন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইফুল, রমজান, শহিদ ও সীমা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়। গত বুধবার বার্ষিক গণিত পরীক্ষা দিতে গেলে তাদের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে সীমা তাৎক্ষণিক দৌড়ে বাড়ি গিয়ে ১০ টাকা আনলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার প্রচণ্ড বকাবকি করেন।

সীমার বাবা মোস্তফা হোসেন বলেন, ওই শিক্ষকের আচরণে ভয় পেয়ে সীমা একপর্যায়ে চেতনা হারিয়ে ফেলে। তাকে অচেতন অবস্থায় বাড়িতে দিয়ে যান বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী রাজু। অন্য তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিতে পেরে কান্নাকাটি করে বাড়ি ফিরে যায়।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মোস্তফা হোসেনসহ অন্য অভিভাবকেরা।

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার বলেন, শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা করে স্কাউট ফি পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল, এটা ঠিক। কিন্তু তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। গত বুধবার গণিত পরীক্ষার সময় তিনি বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলেন বলে দাবি করেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আতিকুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি গত বুধবার শুনেছি। এটি সত্যিই দুঃখজনক ও অমানবিক। একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবিরও বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।