যৌতুকের জন্য স্ত্রীর জিহ্বা ও পায়ের রগ কর্তন!

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর জিহ্বার অগ্রভাগ ও বাম পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন এক পাষণ্ড স্বামী। বর্বর এ নির্যাতনের শিকার হয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে ঘটনার মূল হোতা নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা।

গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লামুয়া গ্রামের বেলাল মিয়ার সঙ্গে সোমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের তিন বছর পর বেলাল গোপনে আরেকটি বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বেলাল-সোমার মধ্যে কলহ দেখা দেয়। তবে সংসারের কথা ভেবে সোমা এ বিয়ে নিয়ে খুব একটা কথা বাড়াননি। কিন্তু বেলাল যৌতুক দাবি করে সোমার ওপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন।

নির্যাতন সইতে না পেরে বছর খানেক আগে সোমা তাঁর বাবার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার পশ্চিম দর্শা গ্রামে চলে আসেন। এরপর মাঝেমধ্যে বেলাল এসে সোমার কাছ থেকে জোর করে টাকা নিয়ে যেতেন। গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে বেলাল তাঁর কয়েকজন সহযোগী নিয়ে পশ্চিম দর্শা গ্রামে আসেন। এ সময় চাহিদামতো টাকা না পেয়ে সোমার ওপর নির্যাতন শুরু করেন তিনি। সহযোগীদের সহায়তায় বেলাল ওড়না দিয়ে সোমার মুখ বেঁধে চাকু দিয়ে প্রথমে জিহ্বার অগ্রভাগ এবং পরে বাম পায়ের রগ কেটে দেন। ডান পায়েও জখম করা হয়েছে। তবে রগ কাটা যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

সোমার বড় ভাই হাফিজ মিয়া বলেন, বোনের চিৎকার শুনে তাঁরা দ্রুত পাশের ঘরে ছুটে যান। তখন বেলাল ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে সোমাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সোমা ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না, দাঁড়াতেও পারছেন না।

এ ঘটনায় বেলাল মিয়াকে প্রধান আসামি করে সোমার বড় ভাই সিলেট নগরের জালালাবাদ থানায় মামলা করেছেন। এরপর পুলিশ গতকাল ভোরে লামুয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে বেলালের ভাই রেদোয়ান মিয়া (৩৬) ও ফয়েজ মিয়াকে (২৭) গ্রেপ্তার করে। সোমাকে নির্যাতনে তাঁদেরও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে বেলালের মা জয়বুনন্নেসাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় বেলাল তাঁর স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করতেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে। বেলালকে গ্রেপ্তারে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।