পটুয়াখালীতে তিনটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, দুর্ঘটনার শঙ্কা

পটুয়াখালীর বাউফল-নওমালা-লোহালিয়া সড়কের তিনটি সেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী যাতায়াত করে। চলে শতাধিক যানবাহন। সেতু তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সেতু তিনটি হলো হোসনাবাদ বাজারের দক্ষিণ পাশের হোসনাবাদ সেতু, বিডিসি খালের ওপর বিডিসি সেতু ও নওমালা বাজারের পাশে খালের ওপর নওমালা সেতু।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাউফল-নওমালা-লোহালিয়া সড়কে ১৯৭৯-১৯৮০ অর্থবছরে ওই তিনটি সেতু ও চারটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নওমালা বাজারের পশ্চিম পাশের সেতুটির পাটাতনের ঢালাই খসে পড়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সেতুটির বেশ কয়েকটি অংশে ফাটল রয়েছে। বিডিসি খালের ওপর বিডিসি সেতুর মাঝখানের ঢালাই খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে।
হোসনাবাদ বাজারের দক্ষিণ পাশের সেতুটির পাটাতনে গর্ত তৈরি হয়েছে।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নওমালা সেতু দিয়ে নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রি কলেজ, নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম নওমালা নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, মধ্য নওমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নওমালা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী যাতায়াত করে।
বিডিসি সেতু দিয়ে বিডিসি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বজলুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ যৌতা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী যাতায়াত করে।
হোসনাবাদ বাজারের দক্ষিণ পাশে হোসনাবাদ খালের ওপর হোসনাবাদ সেতু দিয়ে এনামুল হক মামুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ অলিপুরা বিলবিলাস ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসা, হোসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব যৌতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য যৌতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যৌতা অলিপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াত করে।
পিকআপ ভ্যানচালক আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, সেতু তিনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবু জীবনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
নওমালা এলাকার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতু ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহজাদা হাওলাদার বলেন, এ উপজেলা ছাড়াও দশমিনা, গলাচিপা উপজেলাসহ জেলা শহরের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের সহজ পথ হলো বাউফল-নওমালা-লোহালিয়া সড়ক। এ কারণে সেতু তিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেতুগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতু তিনটি শিগগিরই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন সেতু নির্মাণ করা দরকার।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সেতু তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে হোসনাবাদ বাজারের দক্ষিণ পাশের সেতুটি মেরামতের জন্য ও বিডিসি সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পশ্চিম নওমালার সেতুটির নিচ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পানি প্রবাহিত হয় না। এ কারণে স্থানীয় লোকজন ও ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সেটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।