অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের কবি জীবনানন্দ দাশ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে ছাত্রাবাসের পুকুরের মাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা আত্মসাতে বাধা দেওয়ায় ওই তত্ত্বাবধায়ক এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন।
এর প্রতিবাদে ও তত্ত্বাবধায়কের প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গতকাল রোববার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস পুকুরের মাছ ধরে বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ছাত্রাবাসের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা। এদিকে এসব ব্যাপারে অভিযোগ দিলে উল্টো শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন তিনি।
সঞ্জয় কুমার বিশ্বাসের মারধরের শিকার শিক্ষার্থী বাপ্পি দত্ত অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রাবাসের পুকুরে মাছ ধরছিলেন পুকুর ইজারাদার মঈনুল ইসলাম। রাতে কেন মাছ ধরছেন—জানতে চাইলে তিনি জানান, সঞ্জয় কুমার বিশ্বাসের নির্দেশে মাছ ধরা হচ্ছে। পরে বাপ্পি ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীদের খবর দিলে তাঁরা মঈনুলের কাছ থেকে মাছ বিক্রির টাকা নিয়ে আসেন। এ ঘটনা জানার পর ওই রাতে সঞ্জয় কুমার ছাত্রাবাসে এসে ‘কাঠের চলা’ দিয়ে তাঁকে পেটান এবং গালাগাল করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
গতকাল রোববার তত্ত্বাবধায়কের প্রত্যাহারসহ ১১ দফা লিখিত দাবি কলেজে সাঁটাতে যান শিক্ষার্থীরা। তখনই শিক্ষক পরিষদে ডেকে নিয়ে বাপ্পিকে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেন পরিষদের সম্পাদক কাইউম উদ্দিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, গোপনে মাছ বিক্রি করার প্রতিবাদ এবং রাতে ধরা মাছ বিক্রির টাকা সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিয়ে আসায় তিনি বাপ্পি দত্তের ওপর ক্ষিপ্ত হন।
ছাত্রাবাসের পুকুর ইজারা নেওয়া মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘পুকুর লিজ (ইজারা) নেওয়ার পর প্রায়ই মাছ ধরা হয়। অর্ধেক মাছ তত্ত্বাবধায়ক স্যার নেন। কিছু ছাত্রাবাসে দেন, শুনেছি। বাকিটা বিক্রি করে দেন।’
বিক্রি করে নিজে নিই না দাবি করে তত্ত্বাবধায়ক সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন, ছাত্রাবাসে দেওয়ার পর অতিরিক্ত থাকলে সেটা বিক্রি হয়। ওই ছাত্রকে মারা হয়নি, বকাঝকা করা হয়েছে। শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ডেকে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছে মাত্র।
শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক কাইউম উদ্দিন বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক ওই শিক্ষার্থীকে মেরেছে বা গালাগাল করেছে কি না জানি না। আপাতত ওই শিক্ষার্থীকে কয়েক দিন বাইরে থাকার জন্য বলা হয়েছে। অধ্যক্ষ বরিশালে এলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। তবে বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ফিরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।