ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতি অনেক বড় কিছু প্রত্যাশা করে৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টি তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এখনো পৌঁছাতে পারেনি৷ বিশ্বের মাঝে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে হলে সব শিক্ষককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি আয়োজিত এক বক্তৃতায় অন্যতম সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। নূরজাহান মুরশিদ ও অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্বোধন উপলক্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের সমাজ বিনির্মাণে এর ভূমিকা’ শীর্ষক এ বক্তৃতার আয়োজন করা হয়৷
খান সারওয়ার মুরশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ১৯৪৮ সালে প্রভাষক হিসেবে সম্পৃক্ত হন। পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অনেক দায়িত্ব পালন করেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতার ইতিহাস ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতি অনেক বড় কিছু প্রত্যাশা করে৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টি তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এখনো পৌঁছাতে পারেনি৷ বিশ্বের মাঝে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে হলে সব শিক্ষককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ গবেষণার গুরুত্ব বাড়াতে হবে৷
ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশ স্বাধীনের সময় সব স্তরের মানুষ এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন৷ এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও অংশগ্রহণ করেছেন৷ রাজনীতির কেন্দ্রে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের প্রধান টার্গেট ছিল৷ মুক্তিবাহিনীর ভ্যানগার্ড হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ মুজিবনগর সরকার গঠনের পেছনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক অনেকভাবে সহযোগিতা করেছেন৷ স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সংবিধান প্রণয়ন এবং শিক্ষা ও অর্থনীতির জটিল পরিস্থিতিতে ধারণা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁদের ভূমিকা পালন করেন।
খান সারওয়ার মুরশিদ শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে লিখতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার আগে যে দাবি ছিল, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু স্বাধীনতার এক যুগ পর দেখা যায়, এর উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহারের মাধ্যমে দলীয় রাজনীতি যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে, তা শিক্ষা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে৷
এ সময় এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, সদস্য অধ্যাপক আকমল হোসেন, তাহমিদা বেগম, প্রদীপ কুমার রায়, আবদুল মোমিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷