কালিয়ায় আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ ভাঙচুর-লুটপাট, গুলিবর্ষণ

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা মাদ্রাসা মাঠে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে দোকান বসানো নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের গোপালগঞ্জ, খুলনা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে সোমবার ১৫টি বাড়ি ও স্থানীয় বাজারের ২০টি দোকান ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষ দুটি মামলা করেছে। মামলায় ৬৪ জনকে আসামি করায় এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিন এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার মাহফিলে দোকান বসানো নিয়ে বিএনপির নেতা বাসু শেখের সঙ্গে টিটু শিকদারের তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সোমবার সকালে বাসু শেখের নেতৃত্বে বিএনপি-সমর্থক ৫০-৬০ জন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও দোকানে হামলা চালান। ঠেকাতে গেলে তাঁরা পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রহিম শিকদারসহ ফরিদ শিকদার, চুন্নু শিকদার, সেলিম শিকদার, আলমগীর হোসেনসহ ১৫ জনকে কুপিয়ে জখম করেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রহিম শিকদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের গোপালগঞ্জ ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পাঁচ-ছয়টি গুলি বর্ষণ করে।

শাহাজান মোল্লার স্ত্রী স্বর্ণা বেগম, মিরাজ শেখের স্ত্রী হীরা বেগম ও ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, বাসু শেখ, হাচান শেখ, আকিদুল শেখ, লিপটন, হাসমত শেখ, চান মিয়া শেখ, আরজ শেখসহ ৫০-৬০ জন বাড়িতে হামলা করেন। ১৫-১৬টি বাড়ি ও ২০টি দোকান ভাঙচুরসহ লুটপাট করেন।

পহরডাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন বলেন, বাসু শেখ পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি। আর রহিম শিকদার ইউপি সদস্য এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। বাসু শেখের নেতৃত্বে স্থানীয় বাজারসহ বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। সময়মতো পুলিশ না এলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। রহিম শিকদার এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

বাসু শেখকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

নড়াগাতী থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের ছয়টি গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় ৬৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।