পাংশায় পাউবোর জায়গা দখল করে দোতলা ভবন

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সেনগ্রাম বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখল করে দ্বিতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

ভবন নির্মাণকারী ব্যক্তির নাম আয়ুব সরদার। তিনি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর ছেলে রফিকুল ইসলাম বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ওয়ার্ডের সদস্য।

রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, তাঁরা সরকারি বা পাউবোর জমিতে মার্কেট নির্মাণ করেননি। ক্রয়সূত্রে ওই জমি তাঁদের। তবে পাউবোর পাংশা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মুহা. সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অধিগ্রহণ করা জমি বেচাকেনার সুযোগ নেই। জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা থানাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।

গত ৮ ডিসেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, সেনগ্রাম বাজারের স্লুইসগেটের পাশেই একটি দোতলা ভবন। ভবনের অবকাঠামোগত কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। ওপরের অংশে তিনটি দোকানঘর রয়েছে, নিচের অংশেও কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। তিনজন শ্রমিক কক্ষে রং করছিলেন। তাঁরা বলেন, জমির প্রকৃত মালিক কে তা তাঁরা জানেন না। তাঁরা কেবল দোকানঘরে রং করার কাজ পেয়েছেন।

তবে পাউবোর কর্মকর্তা ও এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা অহেদ আলী খান। ১৯৮৮ সালে পদ্মা নদীর তীরে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের জন্য সেটি অধিগ্রহণ করে পাউবো। ২০১০ সালে অহেদ আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক সেখানকার তিন শতক জমি পাউবোর কাছ থেকে ইজারা নেন। পরে তিনি পরিবার নিয়ে রাজশাহীতে চলে যাওয়ায় জমিটি পড়েই ছিল এ সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী বাসিন্দা আয়ুব সরদার জমিটি নিজের দখলে নেন। তিনি তহসিল অফিসের লোকজনকে হাত করে জমির কাগজপত্রও তৈরি করে নিয়েছেন।

পাউবো ফরিদপুর সার্কেলের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা গিয়াসউদ্দিন আজাদ। তিনি বলেন, যেখানে দোকানঘর তোলা হয়েছে, সেটি পাউবোর জমি। ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে তাঁরা পাংশা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ ছাড়া অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছেও তালিকা পাঠানো হয়েছে।

পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহ্জালাল বলেন, দখল উচ্ছেদ করার আইনগত সুযোগ পুলিশের নেই। এ বিষয়ে আদালত নির্দেশ দিলে বা পাউবো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলে তিনি পুলিশ দিয়ে সহযোগিতা করবেন।